রিচার্ড পাইবাসই বাংলাদেশে দলের কোচ

ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজের পর ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তারা ভালোভাবেই বুঝেছেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য একজন কড়া হেডমাস্টারই দরকার। যিনি শক্তহাতে ক্রিকেটারদের নিয়ন্ত্রণ করবেন। যেমনটা করেছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। শ্রীলঙ্কা সিরিজের পরপরই বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছিলেন, ‘খুব দ্রুতই জাতীয় দলের কোচ নিয়োগ করা হবে।’

বিসিবি প্রেসিডেন্টের সেই ঘোষণা অনুযায়ী দ্রুততম সময়ের মধ্যেই কোচ নির্ধারণ করে ফেলেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। সাবেক কোচ রিচার্ড পাইবাসকেই আবার নিয়োগ দিতে যাচ্ছে বিসিবি। বোর্ডের একটি বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে এ খবর। খুব শিগগিরই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে বোর্ডের তরফ থেকে। নিদাহাস ট্রফির পরই বাংলাদেশ দলের দায়িত্ব নেয়ার সম্ভাবনা বেশি পাইবাসের।

চন্ডিকা হাথুরুসিংহে পদত্যাগ করার পরই কোচের খোঁজে নামে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। শুরুতেই বিসিবির পছন্দের তালিাকয় ছিলেন রিচার্ড পাইবাস। সঙ্গে ক্যরিবীয় ক্রিকেট কোচ ফিল সিমন্সও আসেন সাক্ষাৎকার দিতে। বিসিবি রিচার্ড পাইবাসকেই প্রায় নির্দিষ্ট করে ফেলেছিল; কিন্তু ক্রিকেটারদের ঘোর আপত্তি ছিল তাকে নিয়ে। কারণ, চন্ডিকা হাথুরুসিংহের মতই কঠোর প্রকৃতির মানুষ পাইবাস। কড়া হাতে শাসন করেন তিনি ক্রিকেটারদের।

এ কারণে বোর্ডের কাছে ক্রিকেটাররা পাইবাসের সম্পর্কে আপত্তি জানায়। তারা চেয়েছিল ফিল সিমন্সকে। যিনি কি না ক্রিকেটারদের বন্ধুতে পরিণত হন। মিশে যান ক্রিকেটারদের সঙ্গে। পাইবাস কিংবা হাথুরুসিংহের পুরোপুরি উল্টো চরিত্রের। একেবারে নরম প্রকৃতির। বিসিবিও হঠাৎ করে তাই এমন কোচ নিয়োগ দেয়া থেকে বিরত থাকে।

এরই মধ্যে চলে আসে ত্রিদেশীয় সিরিজ, টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ক্রিকেটাররা বিসিবি সভাপতির কাছে আবেদন জানান, এই সিরিজ এবং টুর্নামেন্টগুলো তারা নিজেরাই নিজেদের পরিচালিত করতে চায়। তারা দেখিয়ে দিতে চায়, দীর্ঘদিন খেলার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সাফল্য আনা সম্ভব। যে কারণে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে খালেদ মাহমুদ সুজনকে দায়িত্ব দিয়ে কোচের ভুমিকা দিয়ে দেয়া হয় মাশরাফি এবং সাকিব আল হাসানকে।

ফলাফল, ঘরের মাঠে পুরোপুরি ভরাডুবি ঘটেছে বাংলাদেশের। ত্রিদেশীয় সিরিজের শুরুতে কিছুটা দুর্বার থাকলেও শ্রীলঙ্কার কাছে এক ম্যাচে ৮২ রানে অলআউট হয়ে ১০ উইকেটে হারার পর পুরো এলোমেলো হয়ে যায় টিম বাংলাদেশ। যেখান থেকে বের হতে পারেনি বাংলাদেশ। ফলে ফাইনালে হার, টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজে চূড়ান্ত ভরাডুবি ঘটেছে বাংলাদেশের।

বিসিবি সভাপতি এই সিরিজ দিয়েই বুঝেছেন, বাংলাদেশের জন্য কেমন কোচ দরকার। তিনি নিজেই জানিয়েছেন, একজন কড়া কোচ না হলে দলকে ঠিক রাখা যাবে না। সে মতেই রিচার্ড পাইবাসকেই পরবর্তী কোচ হিসেবে নিয়োগ দিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

পাইবাস এর আগেও ছিলেন বাংলাদেশের কোচ। তবে মাত্র ৫ মাসের জন্য। ২০১২ সালের ৩০ মে বাংলাদেশের কোচ হিসেবে নিয়োগ পান পাইবাস। ৫ মাস কাজ করার পর চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে তিনি সরে দাঁড়ান বাংলাদেশের কোচিংয়ের চাকরি থেকে। এবার নিশ্চয় তার চুক্তির বিষয়াধি কঠোরভাবে ঠিক করেই তিনি আসছেন বাংলাদেশে! সে সঙ্গে সাকিব-মাশরাফিরাও পেতে যাচ্ছেন আরেকজন কঠোর হেড মাস্টার।