রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে যেতে মিয়ানমার সেনাদের হুমকি

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের সরে যেতে আবারো মাইকিং করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। শনিবার সকালে সীমান্তের কাটাতার ঘেঁষে সেনা মোতায়েন করে টহল জোরদারের পাশাপাশি কয়েক দফা মাইকিং করা হয়। এ সময় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নো ম্যান্স ল্যান্ড থেকে সরে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের অন্য জায়গায় আশ্রয় নিতে বলে। এতে করে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

বর্তমানে প্রায় ৫ হাজার রোহিঙ্গা তুমব্রু সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থান করছে। এলাকাটি বর্ষায় তুমব্রু খালের পানিতে তলিয়ে যায়।

ফলে আগাম সতর্কতা হিসেবে গত সপ্তাহ থেকে সেখানে মাচান ঘর তৈরি করছে রোহিঙ্গারা। তাদের এসব ঘর তৈরিতে সহায়তা করছে কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বিজিবি।

নো ম্যান্স ল্যান্ডের রোহিঙ্গা সাইফুল জানান, হঠাৎ করে শনিবান সকাল থেকে তমব্রু সীমান্তে সেনা মোতায়েন করে মিয়ানমার। বারবার তারা মাইকিং করে নো ম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে চলে যেতে বলছে।

এর আগে চলতি বছরের মার্চে মিয়ানমার সেনাবাহিনী তুমব্রু সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ডের রোহিঙ্গাদের সরাতে একইভাবে মাইকিং করেছিল। সে সময় রোহিঙ্গাদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছিল। পরে উভয় দেশের কর্মকর্তাদের বৈঠকের পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।

কক্সবাজার বিজিবি-৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মঞ্জুরুল হাসান খান জানান, মিয়ানমার সীমান্ত থেকে মাইকিং করা হয়েছে। এরপর রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে বিজিবি সতর্কাবস্থায় রয়েছে।

গতবছরের আগস্টে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে ৭ লাখের বেশি মুসলিম রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

এর মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয় নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম তুমব্রু সীমান্তে। অন্য এলাকার রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে সরিয়ে নেয়া হলেও তুমব্রু সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ডে ৫ হাজারেও বেশি রোহিঙ্গা রয়ে যায়।

নো ম্যান্স ল্যান্ড স্পর্শকাতর এলাকা হওয়ায় বর্তমানে সেখানে রোহিঙ্গারা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।