লালমনিরহাটের আদিতমারীতে ছেলের বিরুদ্ধে মায়ের সংবাদ সম্মেলন

লালমনিরহাটের আদিতমারীতে ছেলের বিরুদ্ধে মায়ের সংবাদ সম্মেলন। রোববার সকালে লালমনিরহাটের আদিতমারী প্রেসক্লাবে আয়োজিত উক্ত সংবাদ সম্মেলনে বৃদ্ধা মা জামেলা বেগম বলেন,
নিজ তিন সন্তান তাকে প্রাণনাশের হুমকি ও জোরপূর্বক জমি দখলের করছেন। এমনকি তার কারনে প্রতিবন্ধি মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ছাড়া হয়েছেন। মামলা করেও ন্যায় বিচার না পাওয়ায় সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করেন।

বৃদ্ধা জামেলা বেওয়া আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গোবধা ভিতরকুটি গ্রামে মৃত জসিম উদ্দিনের স্ত্রী।

সংবাদ সস্মেলনে বৃদ্ধা জামেলা বেওয়া জানান, স্বামী মৃত জসীম উদ্দিন জীবিত থাকা কালিন ছয় ছেলে ও পাঁচ মেয়েকে জমি বাটোয়ারা করে দেন। এ সময় তার প্রতিবন্ধি মেয়ে সাবিনা খাতুনকে ৫৪ শতাংশ ও স্ত্রী জামেলাকে ৭৯ শতাংশ জমি দলিল করে দেন। স্বামীর মৃত্যুর পর তার ও তার প্রতিবন্ধি মেয়ের জমি ছেলেরা বর্গাচাষি হিসেবে চাষাবাদ করতেন। কিছু দিন পরে তিন ছেলে ঈমান আলী, সাইফুল ইসলাম ও সাইদুল ইসলাম তার মায়ের ও প্রতিবন্ধি বোনের জমির ফসল ভাগ দেয়া বন্ধ করে দেন। ফসলের ভাগ আদায় করতে গিয়ে ছেলেদের হাতে কয়েক বার মারপিটের শিকার হন বৃদ্ধা জামেলা বেওয়া। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ভাবে একাধিকবার বৈঠক হয়।

ফসলের ভাগ না পাওয়ায় নিদারুন অর্থ কষ্টে ভোগায় গত ৩০ জুলাই তাদের জমি নিজেরা চাষাবাদ করার ঘোষনা দিলে তিন ভাই মিলে বৃদ্ধা মা জামেলাকে দায়ের কোপে রক্তাক্ত জখম করেন ঈমান আলী গংরা। স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আদিতমারী থানা পুলিশ ঘাতক বড় ছেলে ঈমান আলীকে গ্রেফতার করে। জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও মা ও প্রতিবন্ধি বোনের উপর অত্যাচার শুরু করে ঈমান আলী।

বৃহস্পতিবার(২ সেপ্টেম্বর) পুনরায় নিজেদের জমি চাষাবাদের জন্য গেলে ছেলে ঈমান আলী বৃদ্ধা জামেলাকে পুনরায় মারপিট করে ঘরে আটকিয়ে রাখে। খবর পেয়ে আদিতমারী থানা পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। অপর দিকে ছেলে ঈমান আলী বৃদ্ধা মা ও প্রতিবন্ধি বোনকে মেরে ফেলার হুমকী দেয়। ছেলের দেয়া প্রাণনাশের হুমকীতে প্রতিবন্ধি মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ছাড়া হয়ে আত্নগোপনে রয়েছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে বৃদ্ধা জামেলা বেওয়া দাবি করেন।

অত্যাচারী ও জমি লোভী তিন ছেলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ দায়ের করেও কোন ন্যায় না পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করেন বৃদ্ধা জামেলা বেওয়া। সংবাদ সম্মেলনে বৃদ্ধার প্রতিবন্ধি মেয়ে সাবিনা ও বড় মেয়ে রহিমা বেগমসহ গ্রামবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।

আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, ছেলের হামলায় মা জখমের একটি মামলায় অভিযুক্ত ছেলের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। যা তদন্তনাধিনে রয়েছে। এ মামলায় আগের ও পরের ঘটনা তদন্ত করে আদালতে চার্জসীট পাঠানো হবে।