শ্রীদেবীর শেষ মুহূর্ত নিয়ে বনির আবেগী স্মৃতিচারণ

‘পাপা, আমি তোমায় মিস করছি।’ গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে ফোনে স্বামী বনি কাপুরকে নাকি একথাই বলেছিলেন প্রয়াত শ্রীদেবী। বনিকে তিনি ‘পাপা’ বলে ডাকতেন।

মৃত্যুর ৮দিন পর শ্রীদেবীর সঙ্গে তার শেষ মুহূর্তগুলোর কথা বনি কাপুরের মুখ থেকেই এবার প্রকাশ্যে এল। অন্তত এমনটাই দাবি তার বন্ধু, বক্স অফিস বিশেষজ্ঞ কমল নাহাটার।

বনির সঙ্গে তার কথোপকথন নাহাটা লিখেছেন তার ব্লগে। আর সেখানেই উঠে এসেছে এসব তথ্য।

নাহাটা লিখেছেন, সেদিন ফোনে বনিও শ্রীকে বলেন, ‘আমিও তোমাকে মিস করছি।’

ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, কিন্তু ওইদিন বিকেলে দুবাই গিয়ে তিনি যে চমক দিতে চলেছেন, তা আগে থেকে জানাননি। আসলে বনিকে দুবাই যেতে জোর করেন তার মেয়ে জাহ্নবী। কারণ মেয়ের মনে হয়েছিল, মা কখনও একা থাকে না। হয়তো পাসপোর্ট বা অন্য কোনও জরুরী জিনিস হারিয়ে ফেলতে পারে। তাই বনিকে নাকি দুবাই যেতে বলেন জাহ্নবীই।

বনির কথায়, ‘বিদেশের মাটিতে দুবাইতেই শ্রীদেবী প্রথম একা ছিল। ২২ এবং ২৩ ফেব্রুয়ারি…।’

নাহাটার ব্লগ বলছে, ‘২৪ ফেব্রুয়ারি মুম্বাই বিমানবন্দরে বসেও বনি শ্রীকে বলেন তিনি মিটিংয়ে ব্যস্ত। আগামী কয়েক ঘণ্টা মিটিং চলবে। ফলে ফোন বন্ধও থাকতে পারে। বনি সেদিন দুবাইয়ের হোটেলে পৌঁছান স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিট।

হোটেলের রিসেপশন থেকে চেয়ে নেন শ্রীদেবীর ঘরের ডুপ্লিকেট চাবি। বনিকে দেখে শ্রী জড়িয়ে ধরে বলেন, তার মন বলছিল বনি আসবে।…

দু’জনে প্রায় আধ ঘণ্টা গল্প করেন। বনি প্রস্তাব দেন, একসঙ্গে নৈশভোজে বের হবেন। গোসলে যান শ্রী। বনি লিভিং রুমে টিভিতে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট ম্যাচ দেখছিলেন।

প্রায় ১৫-২০ মিনিট পর অধৈর্য হয়ে ওঠেন বনি। শনিবারের রাত, রেস্তোরাঁয় ভিড় হতে পারে বলে মনে হয় তার। তখন তিনি শ্রীদেবীকে ডাকতে শুরু করেন। ‘জান, জান…’।

এ নামেই আদরের শ্রীকে ডাকতেন তিনি। সাড়া নেই। টিভির আওয়াজ কমিয়ে আবার ডাক। সাড়া নেই। এ বার গোসল ঘরের দরজায় টোকা দিয়ে ‘জান জান’ বলে ডাকেন। দরজা ছিটকিনি দেওয়া ছিল না। বনি ঢুকে দেখেন, বাথটবের জলে ডুবে রয়েছেন শ্রী। মাথা থেকে পা পর্যন্ত পুরোটাই পানির তলায়।

নাহাটার ব্লগ অনুযায়ী, ‘এই পরিস্থিতি দেখে দিশেহারা হয়ে যান বনি।… উনি ডুবে যাওয়ার পর অচৈতন্য হন, নাকি প্রথমে ঘুমিয়ে পড়েন বা অচৈতন্য হয়ে পড়েন এবং তার পর ডুবে যান, সেটা বোধহয় কেউ কোনও দিনও জানতে পারবেন না। কিন্তু সম্ভবত এক মিনিটের জন্যও লড়াই করার কোনও সুযোগই তিনি পাননি কারণ ডুবে যাওয়ার সময় আতঙ্কে যদি হাত-পা ছুড়তেন, তা হলে বাথটাবের বাইরে কিছু পানি উপচে পড়তই। কিন্তু টাবের আশপাশে মেঝেতে এক ফোঁটা পানি ছিল না।’