শ্রীলঙ্কায় বিক্ষোভ ঘিরে হিংসা ঠেকাতে, দেখা মাত্র গুলির নির্দেশ সেনাকে

যত সময় গড়াচ্ছে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হচ্ছে শ্রীলঙ্কায়। আরও জোরদার হচ্ছে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। সরকারপক্ষ এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে সোমবার পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন দুশো জনেরও বেশি। প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের ইস্তফা দেওয়ার পরই বিক্ষোভের আগুনে আরও জ্বলে ওঠে শ্রীলঙ্কা। গত কয়েক মাস ধরে অর্থনৈতিক সঙ্কটে ভুগছে শ্রীলঙ্কা।

বিক্ষোভকারীদের উপর জল কামান নিক্ষেপ

মঙ্গলবার সকালে রাজপক্ষের সরকারি বাসভবন ঘিরে ফেলেন বিক্ষোভকারীরা। বিশাল সংখ্যক সেনা রাজপক্ষের বাসভবনে পৌঁছে সপরিবার তাঁকে উদ্ধার করে। সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে সেনার এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীরা বিদায়ী প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের গেট ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ভোরেই সপরিবার রাজাপক্ষেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে খোলসা করেননি তিনি। যদিও সূত্রের খবর, ত্রিঙ্কোমালিতে নৌসেনাঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছেন রাজাপক্ষে।

বিক্ষোভকারীদের একাংশ

মঙ্গলবার সকাল থেকেই বিক্ষোভ আরও ছড়িয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা জুড়ে। সূত্রের খবর, বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে বাঁচতে মঙ্গলবার সকালেই গোপনে সপরিবারে বাসভবন ছেড়ে ত্রিঙ্কামালিতে নৌসেনাঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছেন পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে।

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য শ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনী কড়া হাতে বিক্ষোভ দমনে সক্রিয় হল । মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সে দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হিংসা ঠেকাতে ‘দেখা মাত্র গুলির’ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সশস্ত্র বাহিনীকে।

সদ্য পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে পূর্ব উপকূলের ত্রিঙ্কোমালি নৌঘাঁটিতে আশ্রয় নিয়েছেন খবর পেয়েই সেখানে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। কয়েক হাজার আন্দোলনকারী নৌঘাঁটি ঘিরে ফেলেছেন বলে সে দেশের সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ‘দেখা মাত্র গুলির’ সরকারি ফরমান প্রাণহানি বাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বস্তুত, গত ৪৮ ঘণ্টার পরিস্থিতি দেখে শ্রীলঙ্কায় ফের গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা দেখছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।

শাসকদলের সমর্থন এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে সোমবার পাঁচ জনের মৃত্যু হয় শ্রীলঙ্কায়। আহত হন দুশো জনেরও বেশি। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন এক জন পার্লামেন্ট সদস্যও। সোমবারই ইস্তফা দেন মাহিন্দা। ইস্তা দেগত কয়েক মাস ধরে অর্থনৈতিক সঙ্কটে ভুগছে শ্রীলঙ্কা। তাঁর জন্য মাহিন্দা এবং তাঁর ভাই তথা শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে দায়ী বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের। মঙ্গলবার সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে সেনা এবং পুলিশের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা সরকার।