সংক্রমণের সর্বোচ্চ চূড়ার দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ

দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ১৪ হাজার ৭৭৮ জনে।মৃত্যুর এই সংখ্যা বাংলাদেশে এযাবৎকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।এর আগে গতকাল সর্বোচ্চ ১৪৩ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে।

এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৪৮৩ জন। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯ লাখ ৩০ হাজার ৪২ জনে।

নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে রোগী শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ২৭ শতাংশ।গত ২৪ ঘন্টায় সারাদেশে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩০ হাজার ১২টি।

শুক্রবার (২ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন আগামী কিছুদিনের মধ্যে দেশে করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। সম্ভাব্য সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি বাংলাদেশে এখনও আসেনি বলেই তারা ধারণা করছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা কমিটির অন্যতম সদস্য আবু জামিল ফয়সাল বিবিসি বাংলাকে বলেন, এখন সংক্রমণ এবং মৃত্যুর যে চিত্র দেখা যাচ্ছে, সেটি আসলে তিন সপ্তাহ আগের অবস্থার বর্তমান পরিণতি।

চলমান লকডাউন শুরুর হওয়ার আগে সপ্তাহখানেক ধরে লক্ষ লক্ষ মানুষ যেভাবে গাদাগাদি করে শহর ছেড়ে গ্রামের দিকে গেছে, তার প্রভাব কী হতে পারে সেটি দেখার জন্য আরও তিন সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা খুব সৌভাগ্যবান হবো যদি দেখি যে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কমে গেছে।’

সংক্রামক রোগ বিষয়ক সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর-এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ এস এম আলমগীরও বলছেন একই কথা।

অতীতে প্রবণতা এবং বর্তমান পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে তিনি ধারণা করছেন, চলতি সংক্রমণের সর্বোচ্চ চূড়ার দিকে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে না এখনও পিক (সর্বোচ্চ চূড়া) এসেছে। পরিস্থিতি দিন-দিন খারাপ হচ্ছে।’

গত এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের একদল গবেষক বলেছিলেন যে জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ নাগাদ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের পিক বা সর্বোচ্চ চূড়া আসতে পারে।

সর্বোচ্চ চূড়া বলতে দিনে অন্তত ১০/১২ হাজার সংক্রমণ শনাক্ত হওয়াকে বোঝানো হয়।

আইইডিসিআর বলছে, বাংলাদেশে ৩০টি’র বেশি জেলায় শনাক্তের হার ১০ শতাংশের বেশি। আর ২০টির বেশি জেলায় সংক্রমণের হার ৩০ শতাংশ কিংবা তার চেয়েও বেশি।

সংক্রমণ কতটা কমবে সেটি নির্ভর করবে লকডাউনের সফলতার উপরে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা।