সরে যেতে হলো সুদানের অভ্যুত্থানের নেতাকেও

সুদানের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ওমর আল-বশিরকে সরানোর নেতৃত্বদানকারী সেনা কর্মকর্তাকেও সরে যেতে হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বশিরকে সরিয়ে দিয়ে দুই বছরের জন্য দেশটির ক্ষমতার দখল নেয় সেনা পরিষদ। আর এই পরিষেদের প্রধান করা হয় সুদানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও শীর্ষ সেনা কর্মকর্তা আওয়াদ মোহাম্মেদ আহমেদ ইবনে আউফকে।

শুক্রবার আওয়াদ নিজেই রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে তিনি সেনা পরিষদের নতুন প্রধান হিসেবে লে. জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ বুরহানের নাম ঘোষণা করেন।

প্রেসিডেন্ট পদ থেকে বশিরকে সরানো হলেও দেশটির বিপুলসংখ্যক জনতা কারফিউ উপেক্ষা করে রাজধানী খার্তুমের সড়কে বেসামরিক সরকারের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে। মূলত তাদের চাপের মুখেই আওয়াদকে সরে যেতে হলো বলে খবর দিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিনভর নাটকীয়তা শেষে আওলাদ রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ঘোষণা দেন, সুদানের প্রেসিডেন্ট কার্যালয় থেকে ওমর আল-বশিরকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।

এ সময় তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের পর থেকে সেনা পরিষদ ‘অন্তর্বর্তীকালীন’ হিসেবে ২ বছর দেশটি পরিচালনা করবে। আর ৩ মাসের জরুরি অবস্থা জারি থাকবে। এই সময়ে ২০০৫ সালের সংবিধান বাতিল এবং রাষ্ট্রপতির শাসন, সংসদ ও মন্ত্রিপরিষদ বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

ওমর আল-বশিরকে সরানোর মাধ্যমে দেশটি থেকে ৩০ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান হয়। তার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ওয়ারেন্ট রয়েছে। ২০০৩ সালে সুদানের দারফুরে সরকারি মদদে ‘গণহত্যা’ চালানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, ওই অভিযানে ৩ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়।

১৯৮৯ সাল থেকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশটিকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন ওমর আল-বশির। কিন্তু, গত কয়েক মাস ধরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছিল।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা রাজধানী খার্তুমে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে জড়ো হওয়া কয়েক হাজার সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টাকালে সেনা সদস্যরা তাদের বাধা দেয়।

গত ৬ এপ্রিল থেকে ওই সংঘর্ষে অন্তত ২২ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে সশস্ত্র বাহিনীর ৬ সদস্যও ছিলেন। এরপরই মূলত নাটকীয়ভাবে পরিস্থিতি পাল্টে দৃশ্যপটে আসে সেনাবাহিনী।