সর্বোচ্চ আসন পাওয়ার পরও ইমরান কারাগারেই থাকবেন

পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ ফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে কোনো দলই সরকার গঠন করার মতো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।জোট সরকার হতে যাচ্ছে পাকিস্তানে।

সবচেয়ে বেশি আসনে বিজয়ী হয়েছেন ইমরান খান সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। ইতোমধ্যে ৯৩টি আসন পেয়ে গেছেন পিটিআই নেতারা।

নির্বাচন ও সরকার গঠন নিয়ে পাকিস্তানজুড়ে যখন উত্তেজনা তুঙ্গে তখন কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্টে দেশটির জনপ্রিয় নেতা ইমরান খান।যদিও কয়েকটি মামলায় গতকাল তার জামিন হয়েছে।

অনিশ্চয়তাতেই থাকছে পাকিস্তানের রাজনীতি। দেশটির জাতীয় পরিষদের নির্বাচনের তিন দিন পরও এর চূড়ান্ত ফল জানা যায়নি।

প্রথমে মনে করা হচ্ছিল কারাবন্দি ইমরান খানই হয়ত সরকার গঠনে সমর্থ হবেন। দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে না দেওয়া ইমরানের সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছেন।

সবশেষ পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে সময় যেন ইমরানবিরোধীদেরই অনুকূলে।মুসলিম লিগ ও পিপিপির মধ্যে সরকার গঠন নিয়ে সফল আলোচনা হয়েছে। সম্ভবত এই দুটি দল আরও কিছু স্বতন্ত্র নিয়ে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে।

পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ৩৩৬ আসনের মধ্যে সরাসরি নির্বাচন হয় ২৬৬ আসনে। বাকি ৭০টির মধ্যে নারীদের জন্য সংরক্ষিত ৬০ ও সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত ১০ আসন।

তিন প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হয়েছিল ২৬৩ আসনে।

রোববার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টায় পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন’র প্রতিবেদনে দেখা যায়—২৬৩ আসনের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৫৬ আসনের ফল প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রাথমিক ফলাফলে ইমরান খানের পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ৯৩ আসন, নওয়াজ শরিফের মুসলিম লিগ (পিএলএম-এন) পেয়েছে ৭৩ ও বিলওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৫৪টি আসন।

দেশটির সরকার গঠনে প্রয়োজন অন্তত ১৩৪ আসন।

এমন পরিস্থিতিতে এক সময়ের বৈরী পিএলএম-এন ও পিপিপি মিলে সরকার গঠন করার সম্ভাবনার কথাই বেশি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ডন’র হিসাবে এখন এই দুই দলের আসন ১২৭টি। সেই জাদুকরী সংখ্যা থেকে তারা সামান্য পিছিয়ে।

আজ পাকিস্তানের স্থানীয় সময় ভোররাত ১২টা ১১ মিনিটে পিএলএম-এন’র মুখপাত্র মরিয়ম আওরঙ্গজেব এক্স বার্তায় জানিয়েছেন—গতকাল পিএলএম-এন সভাপতি শাহবাজ শরিফ ও পিপিপির কো চেয়ারম্যান আসিফ জারদারির বৈঠক থেকে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি। দল দুটি আরও আলোচনায় রাজি হয়েছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলেও তিনি এক্স বার্তায় জানান।

ডন প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, পিএলএম-এন ও পিপিপির মধ্যে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পাশাপাশি ১৭টি আসন পাওয়া এমকিউএম-পির সঙ্গেও বৈঠক করেছেন পিএলএম-এন নেতারা।

এমতাবস্থায় জোট সরকার হলে ইমরান খানকে কারাগারেই থাকতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।