সাতক্ষীরায় ঘরের জন্য জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ

সাতক্ষীরা জেলার আশাশুনি উপজেলায় হাড়িভাঙ্গা এলাকার নাটানা গ্রামের প্রমানিক পাড়ায় শ্যামলদের বসবাস। নিজেদের বসতভিটে টুকুই তাদের একমাত্র সম্বল।

গোলপাতার ছাউনিতে জরাজীর্ণ একটি ঘরের পাশে ছোট্ট অন্য একটি ঘর আছে শ্যামলদের। রান্নার জন্য ছোট উঠানের মধ্যে অস্থায়ী ছাউনির ব্যবস্থা করে সেখানে আছে একটি লাকড়ির চুলা। এটুকুই শ্যামলদের নিজেদের সম্পদের বিবরণ। মা, ২ ভাই নিয়ে শ্যামলদের সংসার। দুই ভাইয়ের মধ্যে বয়সের পার্থক্য বছর চারেক মত।

শ্যামল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ইতিহাসের ছাত্র। ছোট ভাই স্বপন শীল আশাশুনি সরকারি কলেজে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র। বংশগতভাবে প্রমানিক হলেও পরিবারের কেউ চুলকাটা পেশার সাথে জড়িত নয়। শ্যামলের পিতা ব্রােইন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০২১ সালে ৭ জুলাই পরলোক গমন করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫১ বছর।শ্যামলের পিতার মৃত্যুর পর সকল দায়িত্ব পড়ে তার মায়ের উপর।

শ্যামলের মা অন্যের ক্ষেতে খামারে,চিংড়ি ঘেরে দিনমজুরের কাজ করে যা পায় তাই দিয়েই পরিবারের ভরণপোষণ করেন। ভরণপোষণ বলতে অর্ধাহারে মাঝেমধ্যে অনাহারে দিনাতিপাত করা। শ্যামলের মায়ের একার পক্ষে পরিবারের খাবারের যোগান দেওয়া এবং অন্যান্য আনুসঙ্গিক খরচ কষ্টসাধ্য হওয়ায় শ্যামলের মা সকাল বিকাল অন্যের জমিতে কাজ করেন। মাঝেমধ্যে হিমশিম খেলেও শ্যামলের মা দুই ছেলের পড়ালেখার খরচ চালিয়ে নিতে পিছপা হননি। শ্যামল ঢাকায় থাকাকালীন নিজের পড়ালেখার পাশাপাশি টিউশন করে নিজের হাত খরচ নিজে বহন করে। ছোট ভাই স্বপন খুবই নম্র ভদ্র এবং শান্ত স্বভাবের। মায়ের কষ্ট সে অন্তর দিয়ে অনুভব করতে পারে। তাই নিজের পড়াশুনার পাশাপাশি মাঝেমধ্যে অন্যের জমিতে দিনমজুরের কাজ করে সংসারের খরচে সামান্য যোগান দেয়।

সবকিছু মিলিয়ে বহু কষ্ট হলেও জোড়াতালি দিয়ে ধিমে ধিমে ঘুরছে শ্যামলদের সংসার নামের চাকাটি। তাই শ্যামলদের পরিবারের কথা চিন্তা করে, তার পিতার রেখে যাওয়া ৫ শতক সম্পদ। তার উপর এই বর্ষা মৌসুমে তাদের থাকার মতো একটা ঘরের প্রয়োজন। বিশেষ করে সাতক্ষীরাতে বর্ষা মৌসুমে কালবৈশাখী ঝড়ের কবল থেকে যাতে রক্ষা পায় এজন্য তাদের পাকা মজবুত টেকসই ঘর অতীব জরুরি। তাই শ্যামল শীল টেকসই ঘরের জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের একান্ত সহযোগিতা ও সুদৃষ্ঠি কামনা করেছে।