সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা খাদ্য গুদামের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিম্ন মানের চাল ক্রয়ের অভিযোগ

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটায় খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি. এল. এস. ডি) আবুল হাসানের বিরুদ্ধে নিম্ন মানের চাল আমদানী সহ নানা অনিময় দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সূত্রে জানা যায় , চলতি বছর সরকার নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী ৫৭২৯ মে.টন চাল ও ২৫৩৪ মে.টন ধান ক্রয়ের জন্য বরাদ্ধ পান ওই কর্মকর্তা। একই সাথে উপজেলা ভিত্তিক মিল এবং কৃষকদের কাছ থেকে ধান চাল ক্রয়ের কথা থাকলেও বাস্তবে দেখা গেছে তার ভিন্ন রুপ।

সরজমিনে গেলে স্থানীয়রা জানান, খাদ্য কর্মকর্তার সহযোগিতায় থেকে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের ম্যানেজ করে পাটকেলঘাটা এলাকার গোটা কয়েক ব্যবসায়ীদের সাথে গড়ে তোলে গভীর সখ্যতা। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন মিলের নামে বরাদ্দকৃত চাল না নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহনের মাধ্যমে নিম্ন মানের চাল আমাদানি করেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিইচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, খাদ্য কর্মকর্তা আবুল হাসান পাটকেলঘাটা বাজারের ব্যবসায়ী প্রনয় কুমার পালের কাছ থেকে ৩৩ মিলের বরাদ্ধ দিয়ে কুষ্টিয়া জেলা থেকে নিম্ন মানের চালের আমদানী করেন।
এছাড়া আরও কয়েক ব্যবসায়ীর সাথে অবৈধ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অধিক মুনাফার আশায় আশাশুনি ও কলারোয়া উপজেলা থেকে চাল আমদানী করেন। চলতি বছর আমদানীকৃত ধান চাল থেকে ১০-১৫ লক্ষ টাকা আয় করবেন ওই কর্মকর্তা। এ আয়ের একটি বড় অংশ যায় জেলা ও উপজেলা খাদ্য খাদ্যনিয়ন্ত্রক কর্মকর্তাদের পকেটে বলে অভিযোগ তার। কিছুদিন আগে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করতে গেলে ডুমুরিয়া উপজেলা থেকে ট্রাক ভর্তি চাল আমদানীর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে । এক পর্যায়ে ওই ব্যবসায়ী চাপে পড়ে অপকটে সিন্ডিকেটের বিষয়টি স্বীকার করেন।

এছাড়া নিম্ন মানের চাল আমদানির বিষয়ে তথ্য দিয়ে পরিচয় গোপনের জন্য অনুরোধ জানান তিনি । তিনি আরো বলেন, বর্তমানে সরকারী মূল্য তালিকা ৪০ টাকা কেজি হিসাবে ধার্য করা হয়েছে। অনেক সময় নিম্ন মানের চাল কিনে গোডাউনে দিতে হয় । কিন্তু দুঃখের বিষয় এজন্য আবুল হাসানকে ১-২%হারে টাকা ঘুষ দিতে হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে পাটকেলঘাটা বাজারের ব্যবসায়ী প্রনয় কুমার পালের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি তালা উপজেলা মিল মালিক সমিতির সভাপতি সহ জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ পদে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছি । কে বা কারা আমার নামে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে সেটি আমার বোধগম্য নয়। ৩৩টা মিলের নামে আমার কোন বরাদ্ধ নেই আমি নিজেই একটি মিল চালাই। কুষ্টিয়া থেকে চাল আমাদানি করি ঠিকই তবে সেটি সরকারী গোডাউনে বিক্রি করিনা। তবে কোন ব্যবসায়ীদের চাল কম পড়লে সাহায্য করি বলে তিনি অপকটে স্বীকার করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ওই পাটকেলঘাটা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা( ওসি. এল. এস. ডি) আবুল হাসানের সাথে কথা বললে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মিলের নামে বরাদ্ধ যে কেউ নিতে পরে তার জন্য দায়ী আমি না। আমার গোডাউনে কোন নিম্ন মানের চাল আমদানী করা হয় না। তবে বরাদ্ধকৃত মিলের তালিকা চাইলে তিনি তালিকা দিতে অস্বীকৃতি জানান।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার বিশ্বাসের মুুঠোফোনে একাধিক বার কল করলেও তিনি মুঠোফোনটি রিসিভ করেন নাই ।