সিএনজিচালিত বাসেও বাড়তি ভাড়া, নেই তদারকি

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রেক্ষিতে বাস ভাড়া বাড়িয়েছে সরকার। দূরপাল্লার বর্তমান বাসভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৪২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১ টাকা ৮০ পয়সা করা হয়েছে। অর্থাৎ কিলোমিটারপ্রতি যাত্রীকে বাড়তি ৩৮ পয়সা গুনতে হবে।এছাড়া মহানগরে বাসের বর্তমান ভাড়া কিলোমিটারে ১ টাকা ৭০ পয়সা, সেটা ২ টাকা ১৫ পয়সা করা হয়েছে। কিলোমিটারে ভাড়া বেড়েছে ৪৫ পয়সা। মহানগরে মিনিবাসের বর্তমান ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৬০ পয়সা। সেটি বাড়িয়ে ২ টাকা ৫ পয়সা করা হয়েছে। কিলোমিটারপ্রতি ৪৫ পয়সা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।বড় বাসে সর্বনিম্ন ভাড়া ১০ টাকা, মিনিবাসে ৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

একইসঙ্গে বলে দেওয়া হয়েছে, বাড়তি ভাড়া শুধুমাত্র ডিজেল চালিত গণপরিবহনের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।সিএনজি চালিত বাস বাড়তি ভাড়া নিতে পারবে না।

তবে সরকারের এই নির্দেশনা মানছে না সিএনজি চালিত বাসগুলো।

সোমবার (৮ নভেম্বর) ঢাকার সড়কে দেখা গেছে সিএনজিচালিত বাসগুলোও সরকার নির্ধারিত তেলের দামে বাড়তি ভাড়া নিচ্ছে।এ নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে চালক-হেলপারদের তর্কবিতর্ক হচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে হাতাহাতিতেও রূপ নিচ্ছে তা।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে গাবতলী ও টঙ্গীসহ বিভিন্ন রুটে চলা বেশ কয়েকটি বাসে এমন চিত্র দেখা যায়। এসব রুটে লোকাল বাস হিসেবে পরিচিত ৮ নম্বর, অনাবিল, তুরাগসহ বেশ কয়েকটি ওয়েবিলে নিয়ন্ত্রিত বাস।

যাত্রাবাড়ী থেকে টঙ্গী রুটে চলাচলকারী তুরাগ পরিবহনের বেশ কয়েকটি বাস সিএনজিচালিত হলেও যাত্রীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত নতুন ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া যাত্রাবাড়ী-গাবতলী রুটে ৮ নম্বর, উত্তরা রুটে রাইদাসহ কয়েকটি সিএনজিচালিত বাস চলছে। তবে, চালকদের সঙ্গে কথা বললে কেউ বিষয়টি স্বীকার করতে চাননি। কিন্তু গাড়ির পেছনের অংশে নিচে সিএনজির বোতল দেখা যায়।

একাধিক চালক-হেলপারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যাত্রাবাড়ী থেকে টঙ্গী পর্যন্ত পুরাতন ভাড়া ছিল ৪৫ টাকা। সে ভাড়া এখন ৬০ টাকা রাখা হচ্ছে। কোনো কোনো গাড়ির চালক-হেলপার দাবি করেন ৫৫ টাকা রাখছেন তারা। কম-বেশি কেন প্রশ্ন করলে একচালক বলেন, ‘ভাই, কম-বেশি দুই চার টাকা এদিক-সেদিক করে রাখি আরকি’।

ওয়েবিলে নিয়ন্ত্রিত রাইদা পরিবহন চলাচল করে যাত্রাবাড়ী থেকে উত্তরা পর্যন্ত। রাইদার বিষয়ে তুরাগ পরিবহনের এক চালক অভিযোগ করে বলেন ‘রাইদা তো ৭০ টাকা রাখবে। সে পরিমাণে আমরা তো কমই রাখতাছি।’

সিএনজিচালিত হয়েও কেন বাড়তি ভাড়া এমন প্রশ্নে চালক বলেন, ‘ভাড়া বাড়ছে মানে সব গাড়িতেই বাড়ছে। কোন গাড়ি সিএনজি আর কোন গাড়ি তেলের রাস্তায় নামলে তার কী আর হিসেব থাকে। শুধু কী তেলের খরচ নাকি। গাড়িতে আরও অনেক খরচ আছে ভাই।’

তুরাগ পরিবহনের আরেক চালক বলেন, ‘রাস্তায় সিএনজিচালিত বাসের সংখ্যা খুবই কম। ১০০টার মধ্যে হয়তো ১৫টা হবে সর্বোচ্চ। বাড়লে তো সব বাসই বেশি ভাড়া নেবে। মালিক যদি বেশি টাকা নেয়, আমাদের কী করার আছে। আমরা তো গাড়ি চালাই। সিদ্ধান্ত মালিকের।’

তবে রাস্তায় এখন সিএনজিচালিত বাস নেই দাবি করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঢাকা শহরে এখন আর সিএনজিচালিত বাস নেই। যদি থাকে, তবে তাও সর্বোচ্চ ১ থেকে ২ শতাংশ হবে। তাদের আমাদের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। তারা আগের ভাড়াই রাখবে। যদি বেশি রাখে, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথোরিটি (বিআরটিএ) আদালত ব্যবস্থা নেবেন।’