সুন্দরবনের সকল ধরনের পারমিট ৯০ দিনের জন্য বন্ধ

বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনের প্রাকৃতিক বেষ্টনী প্রতিবছর সিডর, আইলা, বুলবুলসহ সাম্প্রতিক আম্পানের মতো সুপার সাইক্লোনের তান্ডব থেকে দক্ষিণাঞ্চলের মানবসম্পদ, বনজসম্পদ ও প্রাণিজলজসম্পদ রক্ষা করে চলেছে। বনবিভাগের গভেষণা এবং তথ্য-উপাত্ত অনুসারে জুন, জুলাই ও আগস্ট-এ তিন মাস (১জুন ২৩ থেকে ৩০ আগস্ট ২৩) তারিখ পযর্ন্ত সুন্দরবনের মাছ কাঁকড়া, পর্যটকসহ সকল প্রকার পাস পারমিট বন্ধ করে দিয়েছেন বন মন্ত্রণালয়।

বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবনের মৎস্য ও বনজ সম্পদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আগামী ৩মাস (৯০) দিন সুন্দরবনে বিচারণকারী পশু পাখিও গাছ-গাছালির প্রজনন মৌসুম।

বন্যপ্রাণী অবাধ বিচারণ ও বংশবিস্তারের স্বার্থে সীমিত এ সময়টিতে পর্যটন, জনপ্রবেশ ও বন-নির্ভর পেশাজীবীদের প্রবেশ এবং অর্থনৈতিক কর্মকা- স্থগিত রাখা সম্ভব হলে ধীরে, ধীরে সুন্দরবন তার রুপ ফিরে পেতে পারে।

সেকারণে জলবায়ু পরিবর্তন সহ বৈশ্বিক বিপর্যয় সংক্রান্ত নানামুখী প্রতিকূলতা রোধ করে উপকূলীয় অঞ্চলে ডেলটা প্ল্যান এর সফল বাস্তবায়নের আওতায় বিশ্বের ম্যানগ্রোভ বনভূমির ইকোসিস্টেম পূনরুজ্জীবিতকরণ এবং টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (ঝউএঝ) -এর ১৩ ও ১৪ নম্বর লক্ষ্যমাত্রা প্রত্যক্ষভাবে অর্জনের লক্ষ্যে জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে সর্বপ্রকার পর্যটন ও বন নির্ভর পেশা স্থগিত রাখা হয়েছে বলে জানান পশ্চিম সুন্দরবনের সহকারি বন সংরক্ষক এমকেএম ইকবাল হোছাইন চৌধুরী।

রেঞ্জ কর্মকর্তা আরো বলেন, সেক্ষেত্রে পর্যালোচনা পূর্বক সংরক্ষিত এলাকাটির উপর জীবন জীবিকার তাগিদে নির্ভরশীল বাওয়ালি, মৎস্যজীবী অথবা নির্ধারিত সময়গুলোতে বিশেষ খাদ্য সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণের করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
সেকারণে কোন প্রকার এ তিন মাস বনজদ্রব্য আহরণ করা থেকে বিরত থাকার আহবান জাননো হয়েছে। এ আইন অমান্য করলে বন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাতক্ষীরা উপকূলের জেলে বাওয়ালীদের কাছে সুন্দরবনে প্রবেশের সকল পারমিট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এবিষয়ে জানতে চাইলে জেলে হানিফ গাজী বলেন, তিন মাস সুন্দরবনে প্রবেশসহ সকল ধরনের বনজ সম্পদ আহরণ বন্ধ করে দেওয়ায় আমাদের সংসার চালানো খুব দুষ্কর হয়ে যাবে, এমনকি আমাদের অনেকের না খেয়েও দিন কাটাতে হবে।

জেলে কামরুল ইসলাম বলেন, দ্রব্যমূল্যের বাজার উর্ধগতি, আমরা কিভাবে এই তিন মাস সংসার চালাবো সরকার যেটুকু চাল দেয় তাতে আমাদের চলে না, আমাদের দাবি এই তিন মাস আমরা সরকারিভাবে সহায়তা পেয়ে সংসার চালাতে পারি সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের সবিনয়ে অনুরোধ রইল।