সৌদি রাজপরিবারে কি ভাঙন ধরেছে?

বেশ কিছুদিন ধরে সৌদি আরবের রাজপরিবারে ভাঙনের জল্পনা চলছে। সৌদি আরবের বাদশা সালমান বিন আবদুল আজিজের ভাই প্রিন্স আহমেদ বিন আবদুল আজিজ আল সাউদ এর এক বিতর্কিত মন্তব্যের পর থেকে ওই জল্পনার শুরু হয়। তবে আহমেদ ওই জল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছেন।

যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে এক বিক্ষোভে যোগ দিয়ে আহমেদ বিন আবদুল আজিজ ওই বিতর্কিত মন্তব্য করেন। ওই মন্তব্যের পর রাজপরিবারে ভাঙনের আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়ে। তবে এক বিবৃতিতে রাজপরিবারে দ্বন্দ্বের শঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

ইয়েমেনে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধে সৌদি আরবের সংশ্লিষ্টতার বিরুদ্ধে সম্প্রতি লন্ডনে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। ওই বিক্ষোভে যোগ দেন আহমেদ বিন। ওই বিক্ষোভের একটি ভিডিও নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায়, রাজপরিবারের বিরুদ্ধে স্লোগানরত বিক্ষোভকারীদের থামার আহ্বান জানিয়ে আহমেদ বিন বলছেন, ‘এই যুদ্ধের সঙ্গে রাজপরিবারের যোগসূত্র কী? নির্দিষ্ট কয়েকজন এর জন্য দায়ী…বাদশাহ আর যুবরাজ’।

ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পর তার এই মন্তব্যকে সৌদি রাজতন্ত্রের ক্ষমতাশালী দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিরল সমালোচনা হিসেবে দেখা শুরু হয়। এছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের জন্য ওই দুই ক্ষমতাশালীকে সরাসরি দায়ী করে জাতিসংঘ।

তবে পরে এক বিবৃতিতে বর্হিবিশ্বের এ ধরনের বর্ণনাকে ‘ভুল’ বলে দাবি করেছেন তিনি। মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বার্তা সংস্থাকে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমি পরিষ্কার করতে চাই, বাদশাহ ও যুবরাজ রাষ্ট্রের সব সিদ্ধান্তের জন্য দায়ী। এটা দেশের ও তার জনগণের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য সত্য। আর এজন্য আমার বক্তব্য ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়।

সৌদি রাজপরিবারের ঐক্য বজায় রাখার লক্ষে রাজপরিবারের অনেক সমর্থক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সৌদি বাদশাহ’র হাতে চুম্বনরত প্রিন্স আহমেদের ছবি পোস্ট করছেন।

সৌদি রাজপরিবারের বিভিন্ন বিষয়ে কঠোর গোপনীয়তা বজায় রাখা হয়। এজন্য এ পরিবারের ভেতরে দ্বন্দ্বের খবর প্রকাশ্যে আসা বিরল।

সৌদি বিশেষজ্ঞ জেমস ডরসি বলেছেন, লন্ডনের ঘটনাটি ইয়েমেনে চলা যুদ্ধের পেছনে সৌদি আরবের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে এই প্রথম কোনো প্রমাণ সামনে এলো।

২০১৫ সালে ইয়েমেন যুদ্ধে ১০ হাজার মানুষকে হত্যা ও লাখ লাখ মানুষকে গৃহহীন করা হয়। এরপর বিশ্বব্যাপী তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে সৌদি আরব।