হায়াত বৃদ্ধির তিন আমল

জীবন-মৃত্যু নির্ধারিত। প্রত্যেক মানুষ তার নির্ধারিত সময়ে মৃত্যুর সঙ্গে আলিঙ্গন করবে। কিন্তু এমন কিছু কাজ আছে, যে কাজগুলো করলে আল্লাহ তাআলা তার হায়াত বৃদ্ধি করে দেবেন। হায়াত বৃদ্ধি পাওয়া আক্ষরিক অর্থেও হতে পারে। অথবা এর অর্থ হলো, মহান আল্লাহ হায়াতে বরকত দান করেন। যার কারণে অল্প সময়ে অনেক বেশি সত্কর্ম করা সম্ভব হয়। ফলে কেউ (উদাহরণস্বরূপ) ৭০ বছরের আমল ৫০ বছরেই করে ফেলতে পারে। কিংবা মহান আল্লাহ তাকে এমন কাজ করার তাওফিক দান করবেন, যা মানুষ যুগ যুগ ধরে স্মরণ রাখবে।

এক. মা-বাবার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা। সালমান ফারসি (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দোয়া ছাড়া অন্য কোনো কিছু ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারে না এবং মাতা-পিতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার ছাড়া অন্য কোনো কিছু হায়াত বাড়াতে পারে না।’ (তিরমিজি, হাদিস: ২১৩৯)

দুই. আত্মীয়তার বন্ধন ঠিক রাখা। আত্মীয়তার সম্পর্ক ঠিক রাখা ইসলামের এক গুরুত্বপূর্ণ বিধান। যারা আত্মীয়তার বন্ধন ঠিক রাখে তাদের জীবনে আল্লাহ তাআলা অদৃশ্য বরকত দান করবেন। আনাস ইবনু মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি চায় যে তার রিজিক প্রশস্ত হোক এবং আয়ু বর্ধিত হোক, সে যেন তার আত্মীয়তার বন্ধন অক্ষুণ্ন রাখে।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৯৮৬)

তিন. প্রতিবেশীর সঙ্গে সুন্দর আচরণ করা। ইসলামে প্রতিবেশীর দায়িত্ব অনেক বেশি। কারণ আমরা সামাজিক জীব। আমাদের জীবনে প্রতিবেশীর ভালোবাসার প্রয়োজন অপরিহার্য। যে ব্যক্তি প্রতিবেশীর হক আদায় করবে, মহান আল্লাহ তার হায়াতে বরকত দান করবেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, আত্মীয়তার বন্ধন বজায় রাখা, চরিত্র সুন্দর করা এবং প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ব্যবহার রাখায় দেশ আবাদ থাকে এবং আয়ু বৃদ্ধি পায়। (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ২৫২৫৯)

এখানে তিনটি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, মাতা-পিতা, আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীর সঙ্গে সুন্দর আচরণের বিশেষ গুরুত্ব আছে। তিনটি বিষয় জীবনে শান্তি আনার ক্ষেত্রে অনেক প্রভাব রাখে।

মানুষের সঙ্গে কোমল ব্যবহার সুন্দর আচরণ এগুলো ইসলামী শিষ্টাচার, যা মণি-মুক্তা সমতুল্য। এসব গুণ মানুষকে সম্মানের ক্ষেত্রে পূর্ণতার আসনে আসীন করে তোলে। মহান আল্লাহ সবাইকে এসব গুণে গুণান্বিত হওয়ার তাওফিক দান করুন।