হিন্দু মৌলবাদীদের কাশ্মীরে অবাধ প্রবেশ নিশ্চিত করতেই ৩৭০ ধারা বাতিল

৬৯ বছরের ইতিহাস বদলে গেল। জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান ভারত সরকার। ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপ করায় ‘বিশেষ মর্যাদা’ হারিয়ে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেল। জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল হবে। উপত্যকায় থাকবে না আলাদা সংবিধান ও পতাকা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা কেড়ে নেয়ায় রাজ্যে ফিরে আসতে পারে হিন্দু পণ্ডিতরা। হিন্দুদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতেই হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করেন তারা।

আগামী সোমবার (১২ আগস্ট) ঈদুল আজহা। কোরবানি ঈদের এক সপ্তাহ আগেই কাশ্মীরের বিশেষ সুবিধার ‘কোরবানি’ দিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার।

ঈদ সামনে রেখে যেখানে উৎসবের প্রস্তুতি নেয়ার কথা ছিল, সেখানে উপত্যকাবাসীর একাংশ সরকারের এমন একতরফা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।
এনডিটিভি জানায়, সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করার ফলে ভারতের অন্য রাজ্যের যে কেউ কাশ্মীরের জমি ক্রয় করতে পারবে।

কাশ্মীরে জমি কেনার ঘটনা খুব প্রাসঙ্গিক কাশ্মীরী পণ্ডিতদের কাছে। ১৯৯০ সালে কাশ্মীরী পণ্ডিতদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছিল। রাজ্য ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল তাদের। সরকারের এ সিদ্ধান্তে আবার তারাই ফিরতে পারবে উপত্যকায়।

১৯৮৯ সালের জুলাই থেকে নভেম্বরের মধ্যে তৎকালীন ফারুক আবদুল্লাহ সরকার সেখানকার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জেল থেকে ছাড়তে শুরু করে। অন্তত ৭০ জন বিচ্ছিন্নতাবাদী ছাড়া পায়। কাশ্মীরী পণ্ডিতদের নিহত হওয়াটা তখন যেন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।

কাশ্মীরজুড়ে বেছে বেছে নামজাদা পণ্ডিতদের চিহ্নিত করে হত্যালীলা আরম্ভ হয়। ১৯৯০ সালের ৪ জানুয়ারি হিজবুল মুজাহিদিন ঘোষণা করে, সব হিন্দুকে কাশ্মীর ছাড়তে হবে।

ওই সময় হিন্দু ছিল প্রায় ৬ লাখ। ২০১৬ সালের এ হিসাব অনুযায়ী, হিন্দু ছিল মাত্র ৩ হাজার। বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা অনুপম খেরও সরকারের সিদ্ধান্তে খুশি হয়েছেন।

রঙিন স্ক্রিনে তিনি দাপুটে। একইভাবে ধীরে ধীরে তার জোরালো রাজনৈতিক মতামতেও ধরা পড়েছে হিন্দুত্ববাদী মনোভাবাপন্ন তিনি। অনুপম খের কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি ঘেঁষা, এমনই চর্চা চলেছে বহুদিন।