শান্তিনিকেতনে শেখ হাসিনা :

‘১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি, প্রয়োজনে ভাগ করে খাব’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ নির্যাতিতদের আশ্রয় না দিয়ে পারে না। ১৬ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ। বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি আমরা। আমরা তাদের তাড়াতে পারি না। ১৬ কোটি মানুষকে যখন খাওয়াতে পারছি, বাকিদের পারবো না? দরকার হলে খাবার ভাগ করে খাব।’

আজ শুক্রবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলাদেশ ভবন’ উদ্বোধন শেষে বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। ‘বাংলাদেশ ভবন’ এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

প্রধানমন্ত্রী কবিগুরু রবীন্দ্রনাথকে স্মরণ করে বলেন, ‘কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন শুধু পশ্চিমবাংলার নয়। দুই দেশের। রবীন্দ্রনাথ শুধু ভারতের নয়, বাংলাদেশেরও। নজরুলও দুই দেশের।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি এখানে আসতে পেরে খুবই আনন্দিত। রবীন্দ্রনাথ আজ আমাদের দুই দেশের মানুষের মনে জড়িয়ে আছেন। বাংলাদশের জাতীয় সংগীত রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন। রবীন্দ্রনাথ আমাদের জীবনের সবকিছুর সঙ্গে মিশে আছেন। আমাদের আনন্দ-দুঃখ, ব্যাথা-যন্ত্রণা, সবকিছুর সঙ্গে মিশে আছেন রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথ আমাদের অন্তরের কবি। আমি মনে করি, বিশ্বভারতী আমারও বিশ্ববিদ্যালয়।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রকৃতির সঙ্গে মিশে আছে শান্তিনিকেতন। মানুষ ও প্রকৃতির অপরূপ মিশেল এই শান্তিনিকেতন। এখানে সব অনুভূতির সঙ্গে মিশে রয়েছেন কবি।’

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করার জন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতবাসী আমাদের পাশে ছিলেন। ভারতবাসীর সেই অবদান আমরা ভুলব না। আমরা ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশই প্রায় সব সমস্যার সমাধান করে ফেলেছি। আমি বিশ্বাস করি যে, সব সমস্যা আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মাধ্যমে সমাধান করতে পারবো। স্থলসীমানা চুক্তি ভারতের সংসদে পাশ হয়ে গিয়েছে। ছিটমহল চুক্তি শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। বন্ধু হয়ে ভারত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের কাছে এটা একটা উদাহরণ। বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারত যথেষ্ট সহযোগিতা করে যাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি চাই, বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে। মানুষের মুক্তির জন্য আমাদের সংগ্রাম। বাংলাদেশকে মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে তুলে ধরতে চাই।’

প্রধানমন্ত্রী আবেগতাড়িত হয়ে বলেন, ‘আমাদের কষ্টের সময় আশ্রয় দিয়েছে ভারত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার সময় পাশে ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। সেই সময় আশ্রয় না পেলে কী হতো জানি না।’

সব শেষে শেখ হাসিনা ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্ব দীর্ঘজীবি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।