৩০ তরুণ সংগঠকের হাতে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’

দেশ ও সমাজের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাওয়া তরুণদের ৩০ সংগঠনের হাতে তুলে দেয়া হলো জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড। মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) রাত ৮টায় ইয়াং বাংলা আয়োজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে ৩০ সংগঠনকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

এ সময় তিনি তরুণদের উদ্দেশে বলেন, বিদেশি কারো সহায়তা নয়, নিজস্ব চেষ্টায় ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলেই, করোনা মহামারির মধ্যেও দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েনি।

সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, ততদিন দেশ এগিয়ে যাবে। আমরা সমাধান করতে চাই। যারা সমাধান করতে চায়, আমরা তাদের সাথে আছি। এটা নেই, ওটা নেই বলে নালিশ শুনতে শুনতে কান ব্যথা হয়ে গেছে। যারা নেতৃত্ব দিতে চায়, আমরা তাদের সাথে আছি।

জয় আরও বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের কারণে মার্চ থেকে আমি দেশে আসতে পারছি না। এখন আমরা ভার্চুয়ালি রাষ্ট্র পরিচালনা করছি।’

প্রধানমন্ত্রীপুত্র বলেন, দেশের মানুষই নিশ্চিত করবে কে আগামী দিনের নেতৃত্বে থাকবে। বঙ্গবন্ধু ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠনের জন্য সংগ্রাম করেছেন। আমাদের রাষ্ট্রের তিনটি মূলনীতি সবাইকে ধরে রাখতে হবে। এখানে হিন্দু, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান, নাস্তিক সবার অধিকার আছে।

২০১৪ সালে আত্মপ্রকাশের পর আওয়ামী লীগের গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)-এর তরুণদের প্রতিষ্ঠান ইয়াং বাংলা মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্লোগান ‘জয় বাংলা’র নামে চালু করে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’। দেশ ও নিজ সমাজের উন্নয়নে কাজ করে যাওয়া তরুণদের স্বীকৃতি দিতে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়। বিগত তিনটি আয়োজনের ধারাবাহিকতায় এবারো দেশ গঠনে কাজ করে যাওয়া তরুণদের ৬০০ সংগঠন থেকে শীর্ষ ৩০ সংগঠনকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

ডা. নুজহাত চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিআরআই-এর ট্রাস্টি নসরুল হামিদ বিপু। ভার্চুয়াল এই অনুষ্ঠান শেষে বিজয়ীদের হাতে সার্টিফিকেট, ক্রেস্ট ও ল্যাপটপ পৌঁছে দেয়া হবে। এ ছাড়াও শীর্ষ মনোনয়ন পাওয়া সকল তরুণ সংগঠন পাবে সার্টিফিকেট।

২০১৫ সালে থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ইয়াং বাংলা তরুণদের ১৩০ সংগঠনকে নিজ সমাজের প্রতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের জন্য প্রদান করে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’। তাদের মধ্যে অনেকেই পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন থেকে তাদের কাজের জন্য অর্জন করেছে পুরস্কার।

গতবারের মতই এবারো জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডে আবেদন করে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী তরুণদের ৬০০ সংগঠন। নারী ক্ষমতায়ন, শিশু অধিকার, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের ক্ষমতায়ন, যুব উন্নয়ন, দরিদ্রদের উন্নয়ন, মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখা, পরিবেশ সুরক্ষা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনসহ আরো বেশ কিছু ক্ষেত্রে অবদানের জন্য এই সংগঠনগুলো থেকে বাছাই করে ৫০ সংগঠনকে রাখা হয়েছে প্রাথমিক জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড-২০২০ বিজয়ীর তালিকায়।

প্রথম পর্যায়ে এবার মোট ছয়টি সাব ক্যাটাগরিতে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করা হবে। ক্যাটাগরিগুলোর মধ্যে ছিল- নারীর ক্ষমতায়ন, শিশু অধিকার, প্রতিবন্ধীদের ক্ষমতায়ন, ক্ষতিগ্রস্ত ও পিছিয়ে পড়া মানুষের ক্ষমতায়ন, চরম দরিদ্রদের ক্ষমতায়ন ও যুব উন্নয়ন।

দ্বিতীয় পর্যায়ে সাতটি সাব ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হবে। নির্ধারিত ক্যাটাগরিগুলো হলো- মাদকবিরোধী সচেতনতা কার্যক্রম, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জরুরি কার্যক্রম, পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত কার্যক্রম, স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং সচেতনতা কার্যক্রম, সামাজিক-সাংস্কৃতিক উদ্যোগ এবং দুর্যোগ মোকাবিলা ও ঝুঁকি হ্রাস।

প্রায় তিন লাখ সদস্য, ৫০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী এবং ৩১৫টির বেশি সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে চলা ‘ইয়াং বাংলা’র লক্ষ্য- ‘ভিশন-২০২১’ এ দেশের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে তরুণ প্রজন্মকে সরাসরি অন্তর্ভুক্ত করা এবং তাদের নতুন ধারণা ও উদ্ভাবনকে বিশ্বে তুলে ধরা।

বিজয়ী শীর্ষ ৩০ সংগঠন হলো:

ব্লাডমেন হেলথ কেয়ার
করোনা মহামারিকালে মানুষের প্রয়োজনে জরুরি চিকিৎসা সেবা ও রক্ত সরবরাহে কাজ করে গেছে ব্লাডমেন হেলথ কেয়ার। ঢাকাভিত্তিক এই সংগঠনটির পরিচালনায় রয়েছেন ডা. মনজুর হোসেন চৌধুরী।

মাস্তুল ফাউন্ডেশন, ঢাকা
সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের, শিক্ষা, চিকিৎসা ও খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছে সংগঠনটিতে নিয়োজিত যুব সমাজ। ২০১৪ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সংগঠনটিতে বর্তমানে ৬০০০ হাজার সদস্য কাজ করছে। বর্তমানে যে যুবকরা সংগঠনের কাজে নিয়োজিত ভবিষ্যতে তারাই সংগঠনটি পরিচালনায় ভূমিকা রাখবে। সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় যুব সমাজ নিয়ে কাজ করছে প্রতিষ্ঠান।

ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ আর্মি, নোয়াখালী 
চলমান করোনাকালীন দুস্থদের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠানটি কাজ করে যাচ্ছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে কাজ শুরু করে ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ আর্মি। বর্তমানে সংগঠনটিতে ২৫ জন সদস্য এসব কাজে সম্পৃক্ত আছেন। আগামীতে আরও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড ও সমাজের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক উন্নয়নে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছেন।

সেন্ট্রাল বয়েস অব রাউজান, চট্টগ্রাম
দুর্যোগকালীন ত্রাণ দিয়ে সহযোগিতায় ২০১৫ সাল থেকে কাজ করেছে সেন্ট্রাল বয়েস অব রাউজান। এ পর্যন্ত ৭০ হাজার মানুষকে ত্রাণ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে ৭ জন সদস্য প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। দেশব্যাপী কাজের পরিধি বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির।

মিশন সেইভ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন, ঢাকা
করোনাকালীন দুস্থ ও অসহায় মানুষের সহযোগিতায় কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি। চলতি বছরের মার্চ থেকে এ সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে মিশন সেইভ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। সংগঠনটিতে বর্তমানে ৫০০ জন সদস্য রয়েছে। ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্য, খাদ্য ও নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কাজ প্রতিষ্ঠানটি কাজে করতে প্রস্তুত রয়েছে।

ফুটস্টেপ বাংলাদেশ, নোয়াখালী
বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা ও দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে মানুষকে সহযোগিতায় ফুটস্টেপ বাংলাদেশ নিয়োজিত রয়েছে। এটি ২০১৩ সাল থেকে কাজ করছে। বর্তমানে ১ হাজারেরও বেশি সদস্য কাজ করছে। ভবিষ্যতে কমিনিউটি মেন্টালিটি চেঞ্জ করা, অর্থাৎ যাতে ডোনারের কাছ থেকে সহযোগিতা না নিতে হয়। সম্পূর্ণ স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসাবে দাঁড়াতে ফুটস্টেপ বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে।

সেফটি ম্যানেজমেন্ট ফাউন্ডেশন, কুড়িগ্রাম
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছে। ২০১৫ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে ফাউন্ডেশনটি। বর্তমানে ৭ হাজার ৫০০ জন সদস্য নিয়ে কাজ করছে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গিয়ে দুর্যোগ, নিরাপত্তা বিষয়ক সচেতন সৃষ্টি করা। এছাড়াও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অগ্নিকাণ্ড বিষয় নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা।

প্লাস্টিক ইনিশিয়েটিভ নেটওয়ার্ক (পিআইএন)
ঢাকা ভিত্তিক এই সংগঠনটির পরিচালনায় রয়েছেন নাজনীন সুরাইয়া। পরিবেশ সুরক্ষায় প্লাস্টিকের ব্যবহার হ্রাস করতে কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি।

ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, ঢাকা
আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন সমস্যা ও পরিবেশ বিষয়ক সচেতনতা নিয়ে কাজ করছে। ২০১৬ সাল থেকে শুরু প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ১ হাজার ৩৭ সদস্য নিয়ে কাজ করছে। ভবিষ্যতে সব বিষয়ে পলিসি লেভেল আপগ্রেড করা ও আবহাওয়া বিষয়ক কাজ করবে ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি।

সাইকিওর অর্গানাইজেশন, জামালপুর
মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি নিয়ে কাজ করছে সাইকিওর অর্গানাইজেশন। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি দেশের ৬০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ শুরু করেছে। সারা দেশে ১৪০ জন ভলেন্টিয়ার কাজ করে যাচ্ছে। সবাই যাতে মানসিক স্বাস্থ্য সহজেই পায় সেটা নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠানটি এগিয়ে যাচ্ছে।

দিপ মেডিক্যাল সার্ভিসেস ও দিপাশা ফাউন্ডেশন, নাটোর
গর্ভবতী নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে দিপ মেডিক্যাল সার্ভিসেস ও দিপশা ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠানটিতে ২০ জনের মতো সদস্য রয়েছেন, যারা গর্ভকালীন শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর তাদের স্বাস্থ্য ও যাতে সঠিকভাবে বেড়ে উঠে সেটা নিশ্চিত করতে কাজ করছে। এটি ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ভবিষ্যতে সারা দেশে শিশুর স্বাস্থ্য ও মানসিক বিকাশে কাজ করতে কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।

পহরচাঁদা আদর্শ পাঠাগার, কক্সবাজার
মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে ও যুবকদেরকে বই পড়তে উৎসাহী করতে পহরচাঁদা আদর্শ পাঠাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। সাথে সাথে যুবকদের খেলাধুলার সাথে সম্পৃক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০১১ সাথে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে দেশের যুবসমাজ মাদক ও বিভিন্ন সামাজিক অপরাধের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। এটিকে নির্মূল করতে ও সুস্থ সামাজিক পরিবেশ গড়তে যুব সমাজের কাছে বই পৌঁছে দিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।

উত্তরণ যুব সংঘ, মৌলভীবাজার
নিম্ন আয়ের চা শ্রমিকদের সন্তানদের জন্য শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করতে উত্তরণ যুব সংঘ বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। তাদের সন্তানরা কম খরচে যাতে সহজেই  শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে সেজন্য কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এটি ২০১৯ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এছাড়াও চা শ্রমিকদের অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছলতা নিরূপণে গঠন করা হয়েছে ফান্ড।

সিনেমা বাংলাদেশ, লক্ষ্মীপুর
সিনেমার মাধ্যমে শিক্ষা ও শিক্ষামূলক সিনেমা নির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে সিনেমা বাংলাদেশ। এটি বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৭ সালে শুরু হওয়া এই সংগঠনের সাথে ১২০ জন কর্মী কাজ করে যাচ্ছে। সমাজে সংঘটিত বিভিন্ন অপরাধ কমাতে ও জনসাধারণকে শিক্ষামূলক সিনেমার সাথে সম্পৃক্ত করতে সিনেমা বাংলাদেশ তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের বাইরে কাজ করতে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।

হ্যাপি নাটোর, নাটোর
বস্তির শিশুদের জন্য মানসম্মত শিক্ষা, সমাজের বিভিন্ন সামাজিক ও সংগঠনে এসব বঞ্চিত শিশুদের অংশগ্রহণে ‘স্বপ্ন কলি’ নামে স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। স্কুলটিতে বস্তির সুবিধাবঞ্চিত ১২০ জন পড়াশোনা করছে। ২০১২ সালে শুরু হওয়া স্কুলটিতে মানসম্মত শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও শিক্ষা বিস্তারে সচেতনতা তৈরি করতে বস্তিবাসীর মধ্যে প্রচারণা চলানো হচ্ছে।

ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়, রাজশাহী
যৌন শিক্ষা ও যৌন হয়রানি থেকে শিশুদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে চারজন যুবক মিলে এ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। এটির সহ-প্রতিষ্ঠা হিসাবে আছেন মো. রায়হানুল হক। বিভিন্ন যৌন নিপীড়ন থেকে নিজেদের রক্ষা ও বড় হয়ে যাতে তারা এ ধরণের কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারে, তেমন শিক্ষা বিস্তারে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন, পটুয়াখালী
সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য তিনটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছে অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন। স্কুল তিনটিতে ৪৫০ জন শিশু শিক্ষাগ্রহণ করছে। সারা দেশের ৩২ জেলায় স্কুলটির কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। এটির সাথে ৩ হাজার ৫০০ জন ভলান্টিয়ার সম্পৃক্ত রয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটি সারা দেশের ক্ষুদ্র ও দারিদ্র্য জনগোষ্ঠী পরিবারের শিশুদের শিক্ষা বিস্তারে বিভিন্ন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

মিজারেবল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশান, সিলেট 
সিলেটের এই সংগঠনটি পরিচালনায় রয়েছেন তাসমিনা বেগম। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমানের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি।

হাতে খড়ি ফাউন্ডেশন, পিরোজপুর
দক্ষিণ উপকূলের জেলেদের সন্তানদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করছে হাতে খড়ি ফাউন্ডেশন। নিজস্ব সংস্কৃতি বিকাশ ও তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ করতে বিভিন্ন সুযোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। দারিদ্র্য এ জনগোষ্ঠীর শিশুরা শিক্ষাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। যার ফলে সামাজিকভাবে তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। সমাজের অন্যান্য সাথে বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি।

এক টাকায় শিক্ষা, চট্টগ্রাম
অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর পরিচালনায় গড়ে তোলা হয়েছে এক টাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। ২০০৭ সালে শুরু হওয়া প্রতিষ্ঠানটিতে ২ হাজার ৫০০ সদস্যের দেওয়া অনুদানে চলছে কার্যক্রম। সদস্যদের মাসিক এক টাকা অনুদানের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শিশুদের মধ্যে শিক্ষাগ্রহণে বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

গুডফিল্ম, বরিশাল
ফিল্মের সাথে এডুকেশন রেসপন্স ও ইনফরমেশন এমন উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে গুডফিল্ম কাজ শুরু করে। সমাজের বিভিন্ন সমস্যা ফিল্মের মাধ্যমে উপস্থাপন করা এবং এর মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরি করা প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশ্য।

উন্মেষ, রাঙ্গামাটি
শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করছে উন্মেষ। ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সংগঠনটি বঞ্চিত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত শিশুরা যাতে সঠিকভাবে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারে সে জন্য কাজ করে যাচ্ছে উন্মেষ। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধর বিটন চাকমা আগামীতে এসব পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মাঝে শিক্ষা সচেতনতা তৈরি করতে নিয়মিত কাজ করবেন।

ইগনাইট ইয়ুথ ফাউন্ডেশন, চাঁদপুর
বস্তির সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা বিস্তারে কাজ করছে ইগনাইট ইয়ুথ ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠানটির তৈরি একটি স্কুলে ৬৭ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশু পড়াশোনা করছে। ২০১৬ সালে শুরু হওয়া এই সংগঠনটিতে ২ হাজার ৫০০ ভলান্টিয়ার রয়েছেন। পুরো বাংলাদেশে এসব সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য শিক্ষার সুযোগ তৈরি করা ও এসব শিশুরা যাতে পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়ার সুযোগ পায় সে জন্য ইগনাইট ইয়ুথ ফাউন্ডেশন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সংগঠনটি।

আইটেক স্কুল, চাঁদপুর 
মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের স্কিলবেজড শিক্ষা ও অনলাইনে শিক্ষার গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করতে প্রতিষ্ঠানটি কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৭ সালে গড়ে উঠা প্রতিষ্ঠানটি ১২ জনের একটি টিম পরিচালনা করছে। ফ্রি অব কস্ট এ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দিচ্ছে। অনলাইন নির্ভর প্রতিষ্ঠানটি দক্ষ জনশক্তি গড়তে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

পজিটিভ বাংলাদেশ, ঢাকা
এন্টি এক্সট্রিমিজম নিয়ে কাজ করছে পজিটিভ বাংলাদেশ। তরুণরা যাতে কোনভাবে উগ্রবাদে জড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য শিক্ষা বিস্তার ও সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণে সম্পৃক্ত করতে প্রতিষ্ঠানটি কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়াও উগ্রবাদসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তরুণরা যাতে জড়িয়ে না পড়ে সচেতনা সৃষ্টি করছে।

দেশি বলারস, ঢাকা
প্রতিষ্ঠানটিতে ক্রীড়া শিক্ষামূলক বিভিন্ন বিষয় শেখানো হয়। এটি ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ক্রীড়া শিক্ষার মাধ্যমে জনগণকে সামাজিক বিভিন্ন কাজে সম্পৃক্ত করা।

ইয়ুথ ফর চেঞ্জ বাংলাদেশ, বরিশাল
প্রতিষ্ঠানটির কো-ফাউন্ডার হিসাবে কাজ করছেন কামরুল হাসান শাওন। এটি ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। দেশের ২৪ জেলায় ৪০০ এর বেশি ভলেন্টিার কাজ করে যাচ্ছেন। নারী ও পুরুষের শিক্ষা নিশ্চিত করা। এছাড়াও লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

সেন্টার ফর রাইটস এন্ড অ্যাম্প: ডেলেপমেন্ট অব পার্সন উইথ ডিসঅ্যাবিলিটিস, বরিশাল
প্রতিবন্ধীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠাটি। ২০১৬ সালে যাত্রা শুরু করা এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবন্ধীরা যাতে সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে তাদের জীবনমান উন্নত করতে পারে কাজ করতে পারে সেজন্য কাজ করে যাচ্ছে। এখানে প্রতিবন্ধীদের জন্য ট্রেনিং ব্যবস্থা করা হয়। যার মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করে যাতে বিভিন্ন করে কাজে সম্পৃক্ত করতে পারে।

বাংলাদেশ হুয়িল চেয়ার স্পোর্টস ফাউন্ডেশন, ময়মনসিংহ
শারীরিক প্রতিবন্ধীরা যাতে বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারে, সেজন্য হুয়িল চেয়ার ভিত্তিক খেলার জন্য কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮ সালে ২৭ এপ্রিল যাত্রা শুরু করে। পাশাপাশি আর্থসামাজিক উন্নয়নে জন্য বিভিন্ন প্রকল্পে গ্রহণ করেছে এটি।

হবিগঞ্জ অ্যাসোসিয়েশান ফর অটিজম এন্ড সোশ্যাল ইমপ্রুভমেন্ট, হবিগঞ্জ
অটিজম শিশুদের জন্য স্কুল ও স্পেশাল এডুকেশন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি। ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এটি। এটির সাথে ২১ জন সদস্য কাজ করছে। জেলার সকল অটিজম শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিত ও প্রত্যেক উপজেলায় সাবসেন্টার করার জন্য প্রতিষ্ঠানটি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।