৫ দিনে ৫ শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার : বিএনপি

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গত পাঁচ দিনে ঢাকাসহ সারদেশে বিএনপির প্রায় ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শনিবার দুপুর পৌনে ১২টায় রাজধানীর নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, সরকার দুরন্ত গতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে বেপরোয়া গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ঢাকাসহ সারাদেশে বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে গোয়েন্দা পুলিশ আকস্মিক ঝাপটা মেরে তাদের আটক করছে। গতকাল লা মেরিডিয়ান হোটেলে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভা চলাকালে ও সভা শেষে বেরিয়ে যাওয়ার পর রাস্তা থেকে ৩৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

বিএনপির এই নেতা বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন- গণগ্রেফতার নয় সন্ত্রাসী ধরা হচ্ছে, পুলিশের প্রতি ভালবাসা বাড়ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে চাই- দেশের বরেণ্য রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, ছাত্র, যুবক ও নারীসহ বিএনপি ও বিরোধীদলের অসংখ্য নেতাকর্মীদেরকে ধরার জন্য চিরুনী অভিযান, আটক ও বাসায় বাসায় হামলার পরও ভালবাসা বাড়ছে? গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার কথা বাদই দিলাম। হায় সেলুকাস!

তিনি বলেন, সরকারের অঙ্গ সংগঠনের ভূমিকা পালন করেছে বলেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পুলিশের প্রতি মানুষের ভালবাসার কথা বলছেন। বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদের ওপর নির্যাতন তো দৈনন্দিন ঘটনা, একটি অরাজনৈতিক ও দেশের স্বার্থের পক্ষে সংগঠন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির মিছিলে পুলিশের উন্মত্ত হামলায় অধ্যাপক আনু মোহাম্মদের পা ভেঙে দেয়াসহ তাদের অসংখ্য বরেণ্য ব্যক্তিকে মারাত্মক আহত করা হয়। সেটিও কেউ ভুলে যায়নি।

রিজভী বরেন, আমি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই-স্বাধীনতা যুদ্ধে আপনাদের অবদান নিঃসন্দেহে অবিস্মরণীয়। ২৫ মার্চের কালোরাত্রে পাক হানাদার বাহিনী প্রথমেই রাজারবাগ পুলিশ লাইন আক্রমণ করে। দেশমাতৃকা রক্ষায় আপনাদের আত্মদান মানুষ এখনও মনে রেখেছে। কিন্তু এই স্বাধীন দেশে বিরোধীদলের ওপর পুলিশের উন্মত্ত হামলা তো মানুষকে সেই পাক হানাদার বাহিনীর নৃশংসতার কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। দেশের জনগণ কেন আপনাদেরকে আওয়ামী অপশাসন ঠেকানোর লাঠিয়াল বলে ভাববে?

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় পুলিশের নিরপেক্ষতা এখন জনগণের কাছে হাস্যকর জায়গায় ঠেকেছে। পুলিশকে দলস্বার্থে ব্যবহার করতে গিয়ে সুকৌশলে পুলিশের মেরুদণ্ড ভেঙে দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়গুলি নিয়ে আপনাদের চিন্তা-ভাবনা করা দরকার। জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দাঁড়ালে সুনাম নষ্টের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান ধ্বসে যায়। আপনাদেরকে অনুরোধ করছি- ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের উপাসক হবেন না।