৭ই মার্চের ভাষণ `চির অম্লান’: জাতির বাঁচার প্রেরণা

বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাঙালিকে চমকে দিয়েছিল তার সহজ সারল্যে, লোকজ প্রজ্ঞার ব্যবহারে, সক্রিয়তার আহ্বানে, বাঙালির পক্ষে তার অহংকারী ও প্রত্যয়ী উচ্চারণে।

বঙ্গবন্ধু তার বক্তৃত্বাশৈলীর অতুলনীয় ভঙ্গিতে কখনো আবেগ, কখনো যুক্তি, কখনো ইচ্ছাকৃত জোরালো পুনরুক্তির মাধ্যমে সোচ্চার ও কৌশলময় ভাষা ব্যবহার করেছেন। এই ভাষণে সাধারণ মানুষ স্বাধীনতার দিক নির্দেশনা পেয়েছিল।

রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই স্লোগানের মধ্য দিয়ে এ ভূখণ্ডে সচেতন প্রতিবাদী রাজনীতির সূত্রপাত। বিকাশ বিবর্তনের পথ ধরে সেটাই হয়ে উঠেছিল ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’। আবার ‘এক নেতা এক দেশ, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ’ কিংবা রাজপথের জনতার উচ্চকন্ঠে উচ্চারণ ‘জেলের তালা ভাঙ্গবো , শেখ মুজিবকে আনবো’। পৃথিবীর খুব কম দেশেই একক কোন নেতার নামে কোটি জনতার আস্থা-মুখরিত প্রতিবাদী স্লোগান। বঙ্গবন্ধু এর প্রতিদান দিয়েছিলেন, সুস্থির রাজনৈতিক লক্ষে সংগঠিত ও সক্রিয় করেছিলেন পুরো জাতিকে। তার নিঃসংশয় লক্ষটি ছিল স্বাধীন স্বদেশ।

উথাল-পাতাল রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে বাঙালি জীবনে আকস্মিক নয়, অবশ্যম্ভাবীভাবেই আসে ৭ই মার্চ। সামনে জনসমুদ্র। মাথার উপরে পাকিস্তানী জঙ্গি বিমানের গর্জন। তবে বিমানের চাইতেও বেশি বজ্র নিনাদে বঙ্গবন্ধু উচ্চারণ করেছিলেন, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।

একাত্তরের শব্দসৈনিক কামাল লোহানি বলেন, মানুষ যা প্রত্যাশা করছিল তার কাছ থেকে, মানুষ যে আকাঙ্ক্ষায় সমবেত হয়েছিল, তাদের স্লোগানের মধ্য দিয়ে সেই প্রত্যাশাটা ফুটে বের হয়েছিল। সেই জিনিসটি কিন্তু বঙ্গবন্ধুর প্রতিফলন ঘটেছিল তার বক্তৃতার মধ্য দিয়ে ।

সাতই মার্চের ভাষণ মুক্তিযুদ্ধের পুরো নয় মাস প্রেরণা যুগিয়েছিল মুক্তিকামী বীর সেনানীদের।