৮১৪ কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল দিচ্ছে না স্থানীয় সরকার

স্থানীয় সরকার বিভাগ ও এর অধীন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ৮১৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা। কিন্তু বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থা ও কোম্পানিগুলোকে এ বকেয়া ফেরত দেওয়ার কোন উদ্যোগ নেই।

এজন্য বকেয়া বিল পরিশোধে হস্তক্ষেপ ও সহযোগীতা চেয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব আব্দুল মালেককে চিঠি দিয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব আহমদ কায়কাউস।

বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে জানা গেছে, শুধু স্থানীয় সরকার নয় সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত আরও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল দীর্ঘদিন বকেয়া রয়েছে। এজন্য বিতরণকারী সংস্থা বা কোম্পানিগুলোকে আর্থিক সংকটে পড়তে হচ্ছে। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পরিচালনা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কার্যক্রম।

স্থানীয় সরকার সচিবকে লেখা চিঠিতে বলা হয়, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থানীয় সরকার বিভাগ ও এর অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বিদ্যুৎ বিতরণকারী ছয়টি সংস্থা ও কোম্পানির মোট পাওনা ৮১৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি টাকা পাবে ঢাকা পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড(ডিপিডিসি)। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংস্থার পাওনা ৩০৮ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।

এছাড়া স্থানীয় সরকার বিভাগ ও এর অধীনস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) ২৩৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বাপবিবো) ১৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা, ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (ডেসকো) ৪১ কোটি ২০ লাখ টাকা, ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) ৮২ কোটি ১৭ লাখ টাকা এবং নর্থ ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (নওজোপাডিকো) ১২৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা পাবে।

বিদ্যুৎ সচিব লিখেছেন, দেশে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিদ্যুতের ভূমিকা অপরিসীম। সরকার স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করে বিদ্যুতের উৎপাদন বৃদ্ধি করে সঞ্চালন ও বিতরণ উন্নয়নে প্রয়াস নিয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণে সরকারের প্রচুর অর্থ ব্যয় হচ্ছে।

বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে ইতোমধ্যে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৫ হাজার ৩৭৯ মেগাওয়াটে উন্নীত করেছে জানিয়ে আহমদ কায়কাউস চিঠিতে বলেছেন, ‘এই উৎপাদন অব্যাহত রেখে ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি করতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু বিভিন্ন সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের কাছে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল দীর্ঘদিন বকেয়া থাকার কারণে বিভিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পরিচালনা ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’

‘বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা বা কোম্পানিগুলোকে বিদ্যুৎ ক্রয় করে বিতরণ করতে হয়। গ্রাহক সেবা উন্নত করতে সরকার ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিতরণ কোম্পানি গঠন করেছে। সেখানে সরকারি ভর্তুকি প্রদানের কোনো সুযোগ নেই। বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকার কারণে বিতরণকারী সংস্থা বা কোম্পানিগুলোকে আর্থিক সংকটে পড়তে হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা বা কোম্পানিগুলোকে টিকে থাকতে হলে সঠিক সময়ে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা একান্ত অপরিহার্য’ লিখেছেন বিদ্যুৎ সচিব।

এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত ২ মে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।