ঢাকায় পৌঁছেছেন পোপ ফ্রান্সিস

ক্যাথলিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা পোপ ফ্রান্সিস তিন দিনের সফরে ঢাকা পৌঁছেছেন।

বৃহস্পতিবার বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে পোপকে বহনকারী বিশেষ বিমান হযরত শাহজালাল (রহ) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

এরপর বিকাল ৩টা ৩ মিনিটে বিমান থেকে নেমে এলে পোপকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

পরে বিমানবন্দরে পোপ ফ্রান্সিসকে লালগালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্য দিয়ে বিমানবন্দর থেকে তিনি সরাসরি সাভারে অবস্থিত জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অমর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

তার পর তিনি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে গিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। সেখানে তিনি স্মৃতিগ্রন্থে স্বাক্ষর করবেন।

পোপ প্রথম দিনেই বঙ্গভবনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বঙ্গভবনে রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, সুশীল সমাজ ও কূটনৈতিক মহলের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানে পোপ বক্তব্য রাখবেন।

সফরের দ্বিতীয় দিনে শুক্রবার সকাল ১০টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খ্রিস্টধর্মীয় উপাসনা ও যাজক অভিষেক অনুষ্ঠানে পোপ বক্তব্য রাখবেন। একই দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পোপের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

বিকালে ক্যাথেড্রাল পরিদর্শন করবেন এবং রমনায় প্রবীণ যাজক ভবনে পোপের সঙ্গে বাংলাদেশের বিশপদের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে পোপ বক্তব্য রাখবেন। তারপর আর্চবিশপ হাউসের মাঠে শান্তির জন্য আন্তঃধর্মীয় ও আন্তঃমাণ্ডলিক সমাবেশে পোপ বক্তব্য রাখবেন।

পোপ তার সফরের শেষ দিন শনিবার সকালে তেজগাঁওয়ে মাদার তেরেসা ভবন ব্যক্তিগতভাবে পরিদর্শন করবেন। তার পর তেজগাঁও গির্জায় যাজকবর্গ, ব্রাদার-সিস্টার, সেমিনারিয়ান ও নবিশদের সমাবেশে পোপ বক্তব্য রাখবেন। তিনি তেজগাঁওয়ে পুরনো গির্জা পরিদর্শন করবেন।

বিকালে নটর ডেম কলেজে যুব সমাবেশে তিনি বক্তব্য রাখবেন।

শনিবার ৫টার দিকে রোমের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।

সফরকালে পোপ লা মেরিডিয়ান হোটেলে থাকবেন। ওই হোটেলে বিশাল মিডিয়া সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। পোপের সফর কভার করার জন্য প্রায় ৩০০ বিদেশি সাংবাদিক ঢাকায় আসছেন। রোহিঙ্গা সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে পোপের এবারের ঢাকা সফরকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

ইতিপূর্বে ভ্যাটিকান থেকে রোহিঙ্গাদের ওপর দমনপীড়নের তীব্র নিন্দা করেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। তখন তিনি রোহিঙ্গাদের ‘রোহিঙ্গা ভাই ও বোন’ বলে সম্বোধন করেছিলেন। কিন্তু তিনি মিয়ানমার সফরে যাওয়ার আগে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মিয়ানমার সফরকালে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দ ব্যবহার না করার জন্য অনুরোধ করেন। মিয়ানমারে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দ উচ্চারণ না করলেও ঢাকায় এসে রোহিঙ্গা শব্দ আবার ব্যবহার করবেন কিনা, সেদিকেই আগ্রহ থাকবে সবার।