জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য বাছাই হলো যেসব সিনেমা

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬ এর জন্য জমা পড়েছিলো প্রায় অনেকগুলো ছবি। তারমধ্য থেকে ২৮টি ছবিকে নির্বাচন করেছে বাছাই কমিটি। আর ওই ছবিগুলো এরই মধ্যে দেখা শুরু করেছে জুরি বোর্ড। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের দীর্ঘদিনের জট আগেই শেষ হয়েছে। আবার যেন জট না লাগে এ জন্য সরকার বেশ তৎপর হয়েছে এবার।

যে ২৮টি সিনেমা জুরি বোর্ডে দেখা হচ্ছে সেগুলো হলো- শবনম ফেরদৌসী পরিচালিত এবং একাত্তর মিডিয়া লিমিটেড ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রযোজিত ‘জন্মসাথী’। জাহিদ হাসান অভি প্রযোজিত ও মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ পরিচালিত ‘সম্রাট’। রাশেদ মোর্শেদ প্রযোজিত ও পরিচালিত ‘পৃথিবীর নিয়তি’। এস এ হক অলিক প্রযোজিত ও পরিচালিত পরিচালিত ‘এক পৃথিবী প্রেম’। সৈয়দ রুবাইয়াত হোসেন প্রযোজিত ও পরিচালিত ‘আন্ডার কনস্ট্রাকশন’।

ড. মাহফুজুর রহমান, এইচ এম আলমগীর, চন্দন সিনহা প্রযোজিত ও সাফিউদ্দিন সাফি পরিচালিত ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী-২’। হাবিবুর রহমান খান ও ফরিদুর রেজা সাগর প্রযোজিত গৌতম ঘোষ পরিচালিত যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘শঙ্খচিল’। ফরিদুর রেজা সাগর প্রযোজিত ও তৌকীর আহমেদ পরিচালিত ‘অজ্ঞাতনামা’। আবদুর রহমান প্রযোজিত ও মুশফিকুর রহমান গুলজার পরিচালিত ‘মন জানে না মনের ঠিকানা’।

ফরিদুর রেজা সাগর প্রযোজিত ও মেহের আফরোজ শাওন পরিচালিত ‘কৃষ্ণপক্ষ’। শাইখ সিরাজ প্রযোজিত, প্রয়াত বেলাল আহমেদ পরিচালিত ‘ভালোবাসবোই তো’। শামীম আখতার ও ফরিদুর রেজা সাগর প্রযোজিত এবং শামীম আখতার পরিচালিত সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ছবি ‘রীনা ব্রাউন’। আমিরুল ইসলাম প্রযোজিত ও সুমন ধর পরিচালিত ‘দর্পণ বিসর্জন’।

মুশফিকুর রহমান গুলজার ও ফরিদুর রেজা সাগর প্রযোজিত এবং মুশফিকুর রহমান গুলজার পরিচালিত সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ছবি ‘লাল সবুজের সুর’। ফরিদুর রেজা সাগর প্রযোজিত নুরুদ্দিন মো. তাহের শিপন পরিচালিত ‘একাত্তরের নিশান’। শামীম রেজা প্রযোজিত ও ওয়াজেদ আলী সুমন পরিচালিত ‘সুইট হার্ট’। আনিসুর রহমান প্রযোজিত ও জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘নিয়তি’।

শরীফ হোসেন প্রযোজিত এবং আবদুল আজিজ পরিচালিত যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘শিকারী’। আবদুল আজিজ প্রযোজিত ও নাদের চৌধুরী পরিচালিত ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’। নাসির উদ্দিন প্রযোজিত এবং জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘অনেক দামে কেনা’। গাউসুল আলম ও মেহজাবিন রেজা চৌধুরী প্রযোজিত এবং অমিতাভ রেজা পরিচালিত ‘আয়নাবাজি’।

শুক্লা বণিক, রেদওয়ান রনি ও সালমা আদিল প্রযোজিত এবং রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘আইসক্রিম’। এম শহীদুল হক তপন প্রযোজিত এবং মো. রফিক সিকদার পরিচালিত ‘ভোলা তো যায় না তারে’। এনামুল হক প্রযোজিত ও মো. আশিকুর রহমান পরিচালিত ‘সারাংশে তুমি’। শরীফ চৌধুরী প্রযোজিত এবং অপূর্ব রানা পরিচালিত ‘পুড়ে যায় মন’। সৈয়দা রুবাইয়াত হোসেন প্রযোজিত ও তাসমিয়াহ আফরিন পরিচালিত ‘কবি স্বামীর মৃত্যুর পর আমার জবানবন্দি’। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রযোজিত ও সুমনা সিদ্দিকী পরিচালিত ‘মাধো’। এ ডেজ এম সালেহ প্রযোজিত এবং অনন্য মামুন পরিচালিত ‘অস্তিত্ব’।

২৮টির মধ্যে তিনটি ছবি রয়েছে যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত। ছবিগুলো হচ্ছে শঙ্খচিল, নিয়তি এবং শিকারী। জুরি বোর্ড সূত্র জানায়, যৌথ প্রযোজনার ছবিগুলোর ক্ষেত্রে কেবল বাংলাদেশি শিল্পী-কলা-কুশলীরাই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হবে। জুরি বোর্ডের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন সুজেয় শ্যাম, মো. খুরশিদ আলম, কেরামত মওলা, আলমগীর, সুবর্ণা মুস্তাফা, ডিন অধ্যাপক ড. শফিউল আলম ভূঁইয়া এবং সরকারি কয়েকজন আমলা।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের একমাত্র রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কার। বাংলাদেশ সরকার চলচ্চিত্র শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ব্যক্তিবিশেষকে এবং শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্যচিত্রকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান করে। ১৯৭৫ সাল থেকে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ একটি বড় উৎসব, যা বর্ণাঢ্য কর্মসূচি নৃত্য ও সংগীতের মাধ্যমে প্রতি বছর আয়োজন করা হয়। অনেকগুলো ছবি যাচাই-বাছাইয়ের পর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়।

পুরস্কার হিসেবে আঠার ক্যারেট মানের পনের গ্রাম স্বর্ণের একটি পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা, একটি সম্মাননাপত্র দেয়া হয়। আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্তকে এক লাখ টাকা দেয়া হয়। শ্রেষ্ঠ পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রযোজক ও শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রযোজককে ৫০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়। এছাড়া শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রযোজক, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালককে ৫০ হাজার টাকা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ৩০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়।