‘২৭ মার্চ ব্যবস্থা নিলে নুসরাত হত্যাকাণ্ড এড়ানো যেতো’
ফেনীর সোনাগাজী ইসলামীয়া ফাজিল মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় প্রশাসনের গাফিলতি ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখতে পুলিশ সদর দফতরের পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত দল দু’দিন ধরে ফেনীতে তদন্ত করছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকালে তারা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেছেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান ডিআইজি (মিডিয়া) শেখ মো. রুহুল আমীন এসময় বলেন, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও মাদ্রাসা কমিটি যদি ২৭ মার্চের ঘটনার পর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করত তাহলে ৬ এপ্রিলের নির্মম ঘটনাটি এড়ানো যেতো।
এসময় তিনি আরো বলেন, এ ঘটনার সাথে যেই জড়িত থাকুক কিনা, যত বড় ক্ষমতাধর হোক না কেন সবার বিরুদ্ধেই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমের দায়িত্বে অবহেলার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা সোনাগাজীর বিভিন্ন মহল, মাদ্রাসা শিক্ষক এবং নুসরাতের পরিবারের সাথে কথা বলেছি।
ফেনীর এসপি এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকারের দায়িত্বে অবহেলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সোনাগাজীতে তদন্তে কাজ করেছি, ফেনীতেও কাজ করবো। তদন্তের পরে আমরা বলতে পারব। এখনো স্পষ্ট কিছু বলা যাচ্ছে না।
ডিআইজি (মিডিয়া) শেখ মো. রুহুল আমীন এর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্য তদন্ত দলে রয়েছেন। তদন্তদল সোনাগাজী ইসলামীয় ফাজিল মাদ্রাসায় রাফিকে পুড়িয়ে মারার ঘটনাস্থল ও রাফিদের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন।
ডিআইজি (মিডিয়া) শেখ মো. রুহুল আমীন এ প্রসঙ্গে আরো বলেন, তদন্ত দল ফেনীতে আরো কিছুদিন অবস্থান করবে। এই সময় আমি এখানকার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, মেয়েটির পরিবার ও স্বজনসহ সকলের সাথে কথা বলবো। এরপর তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করা হবে।
ফেনী জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের তদন্তের দায়িত্ব নেওয়ার তিন দিন পর পিবিআইয়ের প্রধান বনজ কুমার মজুমদার প্রাথমিক তদন্তের বিষয়গুলো উল্লেখ করে পুলিশ মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) একটি প্রতিবেদন দেন।
প্রতিবেদনে সোনাগাজীর ওসিসহ স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। তদন্ত দল ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনসহ প্রশাসনের কোনও ধরনের গাফিলতি ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখবে।
এদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে পুলিশের অবহেলার বিষয়টি উঠে আসলে পুলিশ সদর দপ্তর এ তদন্ত কাজে প্রতিনিধি দল পাঠায়।
২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামীয়া ফাজিল মাদরাসায় আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফির শ্লীলতাহানী ও উক্ত ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা তুলে না নেয়ায় ৬ এপ্রিল পরীক্ষা কেন্দ্রে নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি ও ফেনীর এসপির বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ উঠে। এ অভিযোগে গত ৯ এপ্রিল ওসি মো. মোয়াজ্জেম হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়। অভিযোগের বিষয়গুলো তদন্তে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে পুলিশ সদর দপ্তর।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন