কুল চাষে আশার আলো সাতক্ষীরার কলারোয়ার চাষীদের, ঝুঁকছেন শিক্ষিত বেকাররাও

মৌসুমি সময়ে কুল চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় সাতক্ষীরার কলারোয়ার অনেক কৃষক ও শিক্ষিত বেকার যুবকরা ঝুঁকছেন কুল চাষের দিকে।
কুল উচ্চ ফলনশীল জাতের ফল হওয়ায় শীতকালে বাজারে চাহিদা থাকে ব্যাপক। স্থানীয় বাজারে কুলের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে কলারোয়ার নানান প্রকার ও নামের কুল।

উপজেলার কেঁড়াগাছি গ্রামের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা রানা হোসেন জানান, ‘পড়াশোনার পাশাপাশি কৃষি নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা করি। সেই চিন্তা থেকে ভারতসুন্দরী ও বলসুন্দরী জাতের কুল চাষ করছি ৬ বিঘা জমিতে। বাগানের বয়স ৯ মাস। ফলন ভালো হওয়ায় খরচ বাদে বিঘা প্রতি ৭০-৮০ হাজার টাকা লাভ হবে বলে আশাবাদী।’
তিনি আরো জানান, ‘কুলবাগান প্রস্তুত করতে প্রায় ৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এছাড়া একই বাগানে আম, পেয়ারাসহ অন্য ফসলও চাষ করছি।’

স্থানীয় কুল চাষী ও ব্যবসায়ীরা জানান, ‘টক-মিষ্টিসহ বিভিন্ন জাতের কুল চাষ হচ্ছে। কুল শীতকালীন ফল। বাজারে কুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ক্রেতা-বিক্রেতারা কাছে। কুলগাছ রোপনের ৭ মাস পর থেকে গাছে ফুল আসতে শুরু হয়। কুলের কাঁচা-পাকায় গায়ের রং সবুজ, হলদে, গাড় খয়েরি ও ভেতরের রং সাদা। প্রতি বিঘায় কুলবাগানে বছরে খরচ হয় প্রায় ৩০ হাজার টাকার মতো। খরচ বাদে বিঘায় প্রায় এক লাখ টাকা লাভ হয়। অনিকে শিক্ষিত বেকার যুবকরাও কুলবাগান দেখে চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা দরে। কুলের সাইজ বড় হওয়ায় এক কেজিতে ১৪-২০টি হয়। পূর্ণ মৌসুমে কুল গাছের ডাল থোকায় থোকায় কুলে ভরে থাকে।’

উপজেলার গাড়াখালি গ্রামের কৃষক ইব্রাহিম হোসেন জানান, ‘উচ্চ ফলনশীল জাতের কুলের চারা সংগ্রহ করে চাষ করছি। লাভজনক ব্যবসা, খরচ তুলনামূলক অনেক কম। ভালো জাত নির্বাচন করে কুল চাষ করলে বেশি মুনাফা পাওয়া যায়।’
তিনি আরো জানান, ‘এ চাষে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে প্রতি বছর। ফলে কুল বাগান তৈরির জমির ইজারার মূল্য দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাগান মালিক ও কৃষকদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

এ মৌসুমে আশানুরূপ কুল বিক্রি ও মুনাফা হবে বলে মনে করছেন কুল চাষীরা।