কমনওয়েলথ গেমসে সেরা সাফল্য পেলেন বাংলাদেশের মাবিয়া

এসএ গেমসের মতো স্বপ্ন পূরণ করতে না পারলেও ভারোত্তলনে কমনওলেথ গেমসে নিজের সেরা সফলতা অর্জন করেছেন বাংলাদেশের মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। আরেক ভারোত্তেলক নাজমা খাতুনের ধারাবাহিক ব্যর্থতার বিপরীতে আজ গেমসের ৬৩ কেজি ওজন শ্রেণীতে ষষ্ঠ স্থান লাভ করেছেন এসএ গেমসের স্বর্ণপদক বিজয়ী। ১৪ জনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে এই সফলতা অর্জন করেছেন মাবিয়া।

বিভিন্ন ইভেন্টে বাংলাদেশের অ্যাথলেটদের টানা কয়েকদিনের হতাশাজনক ফলাফলের পর আজ মাবিয়া ঠিকই নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করেন ক্রীড়ামোদীদের। লক্ষ্যের অনেকটাই কাছেই গিয়েছিলেন তিনি। সীমাহীন চেষ্টার পরও শেষ হাসি আর হাসা হয়নি। ষষ্ঠ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হলো তাকে। এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশের ক্রীড়ামোদীদের জন্য এতটুকু স্বান্ত্বনা- এবারের গেমসে বাংলাদেশের কোনো ক্রীড়াবিদের এটিই এখনো পর্যন্ত বড় সাফল্য।

অস্ট্রেলিয়ার গোল্ড কোস্টের কারারা স্পোর্টস অ্যান্ড লেজার সেন্টারে আজ শনিবার ৬৩ কেজি ওজন শ্রেণীতে অংশ নেন মাবিয়া। প্রাণপণ চেষ্টা করেন। স্ন্যাচে প্রথম ও তৃতীয় প্রচেষ্টায় তুলে নেন ৭৩ ও ৭৮ কেজি ওজন। তবে দ্বিতীয়টিতে ব্যর্থ হন ৭৭ কেজি তুলতে। ক্লিন ও জার্কেও দুইবার সফল হন তিনি। আর একবার ব্যর্থ। প্রথম দুই দফায় তুলে নেন ৯৮ ও ১০২ কেজি। কিন্তু শেষটায় ১০৩ তুলতে ব্যর্থ হন। ফলে তিনি ১৩ প্রতিযোগীর মধ্যে ৬ষ্ঠ স্থান লাভ করেন মাবিয়া। এই ইভেন্টে কানাডার মাউডি ক্যারন (৯৮+১২২) মোট ২২০ কেজি ওজন তুলে স্বর্ণপদক জয় করেন। ইংল্যান্ডের জো স্মিথ (৯২+১১৫) রৌপ্য ও রাশিয়ার মনা প্রেটরিয়াস (৯১+১১৫) ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেন।

এর আগে ২০১৩ সালে কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে ৫৮ ওজন বিভাগে ১৫১ কেজি ও ২০১৫ সালে ৬৩ কেজি বিভাগে ১৭৬ কেজি ওজন তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন মাবিয়া। এবারই প্রথম তিনি মোট ১৮০ কেজি ওজন তুলতে দেখালেন। আগের দিন শুক্রবার ব্যর্থ হয়েছেন বাংলাদেশের তিন ভারোত্তোলক। পুরুষ বিভাগে ৬৯ কেজি ওজন শ্রেণীতে শিমুল কান্তি সিনহা অংশ নিয়ে চরম ব্যর্থ হন। ওই ইভেন্টে ১৪ জনের মধ্যে ১৩তম হন তিনি। প্রতিযোগিতায় শিমুল স্ন্যাচে প্রথমবার ১১৫ কেজি ভার তুললেও পরের দুইবার ১২০ কেজি তুলতে গিয়ে ব্যর্থ হন।

মেয়েদের ৫৩ কেজি ওজন শ্রেণীতে বাংলাদেশের ফুলপতি চাকমাও ব্যর্থতার পরিচয় দেন। তিনি ১৪ জনের মধ্যে ১২তম স্থান লাভ করেন। ফুলপতি স্ন্যাচে তুলেন যথাক্রমে ৬২, ৬৬ ও ৬৮ কেজি ভার। ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ৮০ ও ৮৫ কেজি তুললেও ৮৬ কেজি তুলতে গিয়ে ব্যর্থ হন। মেয়েদের ৫৮ কেজি ওজন শ্রেণীতে বাংলাদেশের ফাহিমা আক্তার শুরুতে ভালো করেও যথারীতি ব্যর্থ হন। তিনি স্ন্যাচে ৬৩ ও ৬৬ কেজি ভার তুললেও অল্পের জন্য ব্যর্থ হন ৬৯ কেজি তুলতে। ক্লিন এন্ড জার্কে তুলেন ৮০, ৮৫ ও ৮৮ কেজি ভার। ফলে ১৫ জন প্রতিযোগীর মধ্যে তার জায়গা হয় ১৩তম স্থানে।

ভারোত্তোলনে বাংলাদেশের শেষ প্রতিযোগী জহুরা খাতুন নিশা আগামীকাল রবিবার পরীক্ষায় নামবেন। তিনি অংশ নেবেন ৭৫ কেজি ওজন শ্রেণীতে। সর্বশেষ কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি সর্বোচ্চ (৬৩+৮০) ১৪৩ কেজি ওজন তুলেছিলেন। এদিকে সাঁতারে আরেকটি ব্যর্থ দিন পার করেছে বাংলাদেশ। নাজমা খাতুন ৫০ মিটার বাটারফ্লাইয়েও ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি হিটে ৫ জনের মধ্যে চতুর্থ হন। আর ২৯ জনের মধ্যে হয়েছেন ২৮তম। ৩২.৯৬ সেকেন্ডে সাঁতার শেষ করেন নাজমা। একমাত্র টোঙ্গার সাঁতারু চারিসা প্যনুভেকে পেছনে ফেলেছেন তিনি।

আগামীকাল সাঁতারে বাংলাদেশের শেষ দিন। গোলকোস্টের অপটাস অ্যাকুয়েটিক সেন্টারের পুলে নামবেন মাহমুদুন্নবী নাহিদ ও মো. আরিফুল ইসলাম। নাহিদ ১০০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে ৪ নম্বর হিটে অংশ নেবেন। আর বাংলাদেশ যুব গেমসের চমক আরিফ ৫০ মিটার ব্রেষ্টস্ট্রোকে সাঁতরাবেন তিনি ৫ নম্বর হিটে।