ক্যান্সার ঠেকাতে পারে বাঁধাকপি

বাঁধাকপি বা ব্রোকোলির মতো সবুজ রংয়ের পাতাওয়ালা কিছু সবজি পেটের জন্য ভালো, সেটা বহুদিন ধরেই প্রমাণিত।
কিন্তু এ সবজিগুলো শরীরে কী প্রভাব ফেলে, তার খুব বিস্তারিত ব্যাখ্যা এতদিন ছিলনা।

ব্রিটেনের একদল বিজ্ঞানী এখন বলছেন বলছেন, এসব সবজি পাকস্থলীতে গিয়ে যখন হজম হতে থাকে, সেসময় এগুলো থেকে ক্যান্সার প্রতিরোধী রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরিত হয়।

ফ্রান্সিস ক্রিক ইন্সটিটিউটের ওই গবেষকরা বলছেন, প্রতিরোধে বাঁধাকপি, ব্রোকোলি বা কেইল শাকের মত কিছু সবজি বাউয়েল বা মলাশয়ের ক্যান্সার ঠেকাতে পারে।

পরীক্ষাগারে ইঁদুরের ওপর গবেষণায় দেখা হয়েছে কীভাবে সবজি পাকস্থলী এবং অন্ত্রের ওপর পাতরা আবরণ তৈরি করে। চামড়ার মতো অন্ত্রের আবরণও ক্রমাগত বদলাতে থাকে। প্রতি চার-পাঁচদিনের ব্যবধানে নতুন আবরণ তৈরি হয়। তবে এই প্রক্রিয়া বাঁধাগ্রস্ত হলে অন্ত্রে প্রদাহ, এমনকী ক্যান্সারও হতে পারে।

নতুনএই গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, বাঁধাকপি বা ব্রোকোলির মত ক্রসিফেরাস গোত্রের কিছু সবজি থেকে যে রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরিত হয় তা এই আস্তরণ তৈরির প্রক্রিয়াকে বাধাহীন করতে সাহায্য করে।

গবেষকরা দেখছেন খাবার চিবানোর সময় এই সবজিগুলো ইন্ডোল-থ্রি-কার্বিনোল নামে একটি রাসায়নিক পদার্থ তৈরি করে। গবেষক ডা. গিট্টা স্টকিঞ্জার বলেন, ক্যান্সার প্রতিরোধে এটা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে এসব সবজি যেন বেশিক্ষণ রান্না করা না হয় এবং বেশি গলে না যায়।

ইন্ডোল-থ্রি পাকস্থলীর অ্যাসিডের সংস্পর্শে এসে কিছুটা বদলে যায়। তারপর অন্ত্রের শেষভাগে গিয়ে এটি স্টেমসেলের আচরণ বদলে দিতে পারে। এই স্টেমসেলই অন্ত্রের পাতলা আবরণ তৈরিতে সাহায্য করে, অন্ত্রের প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে।

গবেষণায় দেখা গেছে ইন্ডোল-থ্রি-কার্বিনোল সমৃদ্ধ সবজি ইঁদুরের পাকস্থলীতে ক্যান্সার প্রতিরোধ করছে। স্টকিঞ্জার বলেন, আমরা দেখেছি ইঁদুরের পাকস্থলীতে যখন টিউমার তৈরি হচ্ছে, তখন এই সবজিগুলো সেই টিউমারের গ্রোথ থামিয়ে দিচ্ছে। নিজেও এখন মাংস কমিয়ে বেশি সবজি খাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন এই চিকিৎসক।

তিনি বলেন, খাবার নিয়ে কিছুদিন পরপর আমাদের নানা পরামর্শ দেয়া হয়। অনেক সময় এগুলো বিভ্রান্তি তৈরি করে, যুক্তি ছাড়া আমাকে যদি কোনো কিছু খেতে বলা হয়, আমি তা গ্রহণ করবো না।

ব্রিটিশ চ্যারিটি ক্যান্সার রিসার্চ ইউকের অধ্যাপক টিম কে বলেন, এই গবেষণায় যেটা পাওয়া গেল তা হচ্ছে এসব সবজিতে শুধু যে বেশি ফাইবার বা আঁশ রয়েছে তাই নয়, এগুলো থেকে যে রাসায়নিক পদার্থ বের হয় সেটা মলাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে পারে।