কলারোয়ায় দুই কিশোরীর সমকামী প্রেম, বিয়ে করতে অনড়, অবশেষে আটক

টিকটকে পরিচয়, এরপর ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার ও ইমোতে দীর্ঘদিনের মোবাইল সমকামীতা। অবশেষে বিবাহিত বান্ধবীর প্রেমের টানে সাতক্ষীরার কলারোয়ার এক কিশোরীর কাছে ছুটে আসে সুনামগঞ্জের এক কিশোরী। তাদের বিয়ের ব্যবস্থা না করলে দেয় আত্মহত্যার হুমকিও। এমন অবস্থায় তাদের নিয়ে বিপাকে পড়ে কলারোয়ার বিবাহিত কিশোরীর পরিবার। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। পরে সেই দুই সমকামী কিশোরীকে আটক করেছে পুলিশ। উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের ব্রজবাকসা এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার তাদের দুইজনকে আটক করা হয়।
আটক একজন কিশোরী হলো সুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারা বাজার থানার ইদনপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে মহিমা খাতুন (১৭) ও অপরজন সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের ব্রজবাকসা গ্রামের আনিসুর রহমানের মেয়ে রুবিনা খাতুন (১৮)। এদের মধ্যে রুবিনা বিবাহিত। সে ওই সংসার করতে চাচ্ছেন না।

কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, প্রায় ১বছর আগে ফেসবুক ও টিকটকে সুনামগঞ্জের কিশোরীর সঙ্গে কলারোয়ার কিশোরীর পরিচয় হয়। এরপর তারা ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে নিয়মিত যোগাযোগ করতো। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বুধবার ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জের কিশোরী মহিমা বিয়ে করার প্রস্তুতি নিয়ে কলারোয়ার কিশোরী রুবিনার কাছে চলে আসে। পরিবারের লোকজন ও স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ওই দুই কিশোরীকে বারবার বোঝানো হলেও তারা ছিলো নাছোর। এই সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দলে দলে লোকজন ব্রজবাকসা গ্রামের বাড়িতে ভিড় জমায়। সংবাদ পেয়ে কলারোয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ওই দুই কিশোরীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে তাদের বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়।

স্থানীয়রা বলছেন, বাংলাদেশে সমলিঙ্গের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকৃত নয়। দুই কিশোরীর অযৌক্তিক দাবি মেনে নেয়ার মতো না। খুব দ্রুত দুই মেয়েকেই পৃথক করা প্রয়োজন।

এর আগে কলারোয়ার কিশোরী রুবিনার মা বলেন, আমার আদরের একমাত্র সন্তান। তার কাজে আমি খবুই কষ্ট পেয়েছি। সিলেটের ওই মেয়েটিকে তার বাড়িতে চলে যেতে বলছি, সে যাচ্ছে না। সে কিছুতেই আমার মেয়েকে ছাড়া যাবে না বলে বলছে। পরে তার পরিবারকে বিষয়টি জানানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। বিষয়টি নিয়ে খুবই বিপদে আছি। পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নাছিমা খাতুন জানান, দুই কিশোরীর দাবি-তারা কেউ কাউকে ছাড়া থাকবে না। তারা গার্মেন্টসে চাকরি করে একত্রে সারাজীবন কাটাবে বলে জানিয়েছে। এক্ষেত্রে তারা একে অপরকে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বেঁছে নিয়েছে।

আটকের আগে দুই কিশোরী জানান, ফেসবুক ও টিকটকের মাধ্যমে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের তৈরি হয়। আমরা এখন কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারবো না।