খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন যেকোনো দিন

রায়ের কপি তুলে যত দ্রুত সম্ভব আপিল ও জামিনের জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করতে আইনজীবীদের নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। শনিবার বিকেলে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোড়ের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যান পাঁচজন আইনজীবী। সেখানে আইনজীবীদের তিনি রায়ের কপি তুলে আপিল ও জামিন আবেদন করতে বলেন।

শনিবার বিকেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা কথা বলেন তাঁর আইনজীবী রেজাক খানসহ আরও পাঁচ আইনজীবী। খালেদার সঙ্গে দেখা করার পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রোববার বা সোমবার রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর চলতি সপ্তাহের যেকোনো দিন তাঁরা আপিল করবেন।

গত বৃহস্পতিবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছর কারাদণ্ডের সাজা দেন ঢাকার বিশেষ জজ-৫ আদালত। অন্য ৫ জনের ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন। রায়ের পর তাঁকে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের কারাগারে নেওয়া হয়। এরপর গতকাল শুক্রবার খালেদা জিয়ার ভাইসহ তাঁর আত্মীয়স্বজন কারাগারে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। শনিবার তাঁর পাঁচজন আইনজীবী আবদুর রেজাক খান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আইনজীবী মওদুদ আহমেদ, সাবেক স্পিকার জমিরউদ্দিন সরকার, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী সাক্ষাৎ করেন।

খালেদা জিয়াকে কেমন দেখলেন, জানতে চাইলে আবদুর রেজাক খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ম্যাডাম খালেদা জিয়ার মনোবল অটুট আছে। কিন্তু তাঁকে বিশেষ কোনো সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। একজন সাধারণ কয়েদির মতো তিনি আছেন। তাঁর ঘরে নেই কোনো শীতাতপযন্ত্র। তাঁর গৃহকর্মী ফাতেমা ভেতরে নেই।’

রেজাক খান যখন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, তখন কারাগারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। জেলারকে তাঁরা ২০০৬ সালের সংশোধিত কারাবিধির কপি দিয়েছেন। রেজাক খান বলেন, জেলারকে তাঁরা বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া কারাবিধি অনুযায়ী বিশেষ সুবিধা পাওয়ার হকদার। কিন্তু জেলার সাহেব বলেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ছাড়া খালেদা জিয়ার সঙ্গে গৃহপরিচারিকা কিংবা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। আগামীকাল রোববার খালেদা জিয়ার পক্ষে তাঁর আইনজীবী প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আবেদন করা হবে বলে জানান রেজাক খান।

খালেদা জিয়ার প্রধান আইনজীবী আবদুর রেজাক খান বলেন, ‘উচ্চ আদালত থেকে জামিন না পাওয়া পর্যন্ত কারাগারেই থাকতে হবে খালেদাকে।’

এর আগে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে মওদুদ আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় কারাগারে ব্যক্তিগত গৃহকর্মীকে রাখার সুযোগ না পাওয়ার পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিশেষ সুবিধাও তাঁকে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁকে জনমানুষ থেকে দূরে নির্জন কারাগারে রাখা হয়েছে।’

মওদুদ সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, সাবেক সংসদ সদস্য হিসেবে, একটি দলের প্রধান হিসেবে তাঁর ডিভিশন পাওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হচ্ছে না।