পেটের ভেতর দেড় কেজি নাট-বল্টু-পেরেক

এক ইঞ্চি লম্বা একটি লোহার পেরেক, নাট-বল্টু, সেফটি পিন, চুড়ি, ইউ-পিন, চুলের পিন, ব্রেসলেট, চেইন, মঙ্গলসুত্র ও তামার রিং। এটা কোনো হার্ডওয়্যার কিং-বা স্বর্ণালঙ্কারের দোকানের পণ্যের তালিকা নয়। এসব উদ্ধার হয়েছে এক নারীর পাকস্থলী থেকে।

সম্প্রতি ভারতের আহমেদাবাদের একটি বেসরকারী হাসপাতালে অপারেশনের পর ওই নারীর পাকস্থলী থেকে এসব পাওয়া গেছে। এ ঘটনা নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চল্লিশোর্ধ্ব ওই নারীর নাম সঙ্গীতা। অপারেশনের আগে একটি সরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। পেটে ব্যথা অনুভব করায় গত ৩১ অক্টোবর তাকে ওই বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

প্রকৃতপক্ষে ওই নারীর জন্মস্থান ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশে। অসুস্থ অবস্থায় আহমেদাবাদের শাহের কোটা নামক এলাকার একটি রাস্তা থেকে তাকে উদ্ধার করে আদালতের নির্দেশে সরকারি মানসিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে দেয়া হয়।

হাসপাতালটির জ্যেষ্ঠ সার্জন ডা. নিতীন পারমার বলেন, ‘যখন তাকে এখানে নিয়ে আসা হয় দেখি তার পেট পাথরের মতো শক্ত। এক্স-রে করার পর দেখা যায় তার পেটে একটা স্তুপ। সেফটি পিন তার ফুসফুস থেকে বের হয়ে আছে আর একটা পিন তার পাকস্থলীতে ঢুকে গেছে। এটা দেখার পর খুব শীঘ্রই আমরা তার অপারেশন করি।’

ডা. নিতীন পারমার জানান, ওই নারী ‘আকুফাগিয়া’ নামে এক বিরল মানসিক রোগে ভুগছেন। আকুফাগিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ওই রোগে আক্রান্তরা ধারালো অস্ত্র ও অপচনশীল বিভিন্ন বস্তু খেয়ে ফেলে। এটা মূলত মানসিকভাবে অসুস্থ মানুষদের হয়। এরকম রোগী আমরা বছরে খুব জোর হয়তো একটা পাই। তিনি বোধহয় অনেকদিন ধরে এ রোগে আক্রান্ত।’

আড়াই ঘণ্টার অপারেশন করার সময় একের পর এক তার পেট থেকে লোহা ও ধাতুর ধারালো বস্তু, মেয়েদের ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রীসহ আরও অনেক কিছুই বের হতে থাকে। সবি মিলিয়ে যার ওজন দাঁড়ায় প্রায় দেড় কেজি।

সরকারী ওই মানসিক হাসপাতালটির মনোরোগ বিশেষজ্ঞ অর্পণা নায়েক বলেন, ‘অপারেশনের পর সঙ্গীতাকে এখন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। আমরা তার ভাইয়ের খোঁজ পেয়েছি। কিন্তু তার পরিবার তাকে ফেরত নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তবে আমরা আশা করছি পরিবারের কাছে আমরা তাকে ফেরত দিতে পারবো।’