প্রিয়তমার পাশেই সমাহিত হবেন এ যুগের শাহজাহান

তার নাম ফইজুল হাসান কাদরী। তাকে এ যুগের শাহজাহান বলা হয়। এর পেছনে রয়েছে যথাযোগ্য কারণ।

সম্রাট শাহজাহানের মতো হাসান কাদরীও তার প্রয়াত প্রিয়তমার জন্য বানিয়েছেন প্রেমের তাজমহল।

পাথর্ক্য শুধু এখানেই যে, শাহজাহানের মতো ছিল না তার সাম্রাজ্য, ছিল না ঐশ্বর্য। তবু হৃদয় ছিল সম্রাট শাহজাহান তুলনীয়।

স্থানীয়দের মতে, কাদরী নিজের পৃথিবীতে তিনি নিজেই সম্রাট। তাকে ডাকা হয় বুলন্দশহরের শাহজাহান।

ভারতের উত্তরপ্রদেশের দেবাই তহশিলের কাসেরকালান নামক গ্রামে হাসান কাদরী এ তাজমহল গড়ে তোলেন। আকার, জৌলুশ ও ঐতিহ্যে আগ্রার তাজমহল কাদরীর তাজমহল থেকে কয়েক আলোকবর্ষ এগিয়ে। কিন্তু ভালোবাসায়? সেখানে কোনো কমতি ছিল না কাদরীর।

ভারতীয় দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমসে প্রকাশ, ১৯৫৩ সালে তাজমুল্লি বেগমকে বিয়ে করেন কাদরী। ২০১১ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তাজমুল্লি বেগম মারা যান। ৫৮ বছর একসঙ্গে চলার পর একা হয়ে যান কাদরী।

স্ত্রী শোকে মুহ্য কাদরী পরের বছরই বেগমের সমাধির ওপর তাজমহল বানানোর পরিকল্পনা করেন।

পোস্টমাস্টারের চাকরি করে যা সঞ্চয় করেছিলেন, সবটাই ঢেলে দিলেন তাজমহলের জন্য।

জানা গেছে, এ নির্মাণে সাহায্য করতে চেয়েছিলেন দেশটির উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। কাদরী রাজি হননি তাতে। মন্ত্রীর সেই অনুদান নিয়ে নিজের জমিতে তিনি গড়েছেন একটি কলেজ।

অথচ তাজমহলের জন্য মার্বেল আনাতে তিল তিল করে জমিয়েছিলেন দুই লাখ টাকা।

পরিবারসূত্রে জানা গেছে, জয়পুর থেকে মার্বেল আনাবেন বলে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কাদরী।

তবে নিয়তি তাকে ভালোবাসার কাজ সম্পূর্ণ করে যেতে দেয়নি। ৮৩ বছরের ফয়জুল হাসান কাদরী এক সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রীর কাছেই চলে গেলেন।

হিন্দুস্তান টাইমসে প্রকাশ, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় অজ্ঞাত একটি গাড়িচাপায় নিহত হন ফয়জুল হাসান কাদরী।

শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী স্ত্রীর পাশেই সমাহিত করা হবে কাদরীকে। নিজের বানানো তাজমহলে সমাধিস্থ হবেন বুলন্দশহরের শাহজাহান।