ব্লু হোয়েলের পর নতুন প্রাণঘাতী গেম ‘মোমো’

ফের আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার এক প্রাণঘাতী ‘গেম’ ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্ব জুড়ে। ‘মোমো চ্যালেঞ্জ সুইসাইড গেম’ নামের এই গেম এবার ছড়িয়ে পড়ছে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে।

শিশুদের অনলাইন গেম ‘মাইন ক্রাফটে’ও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই ‘মোমো’। নতুন এই গেমের ফাঁদে পড়ে ইতোমধ্যে আর্জেন্টিনার ১২ বছরের এক কিশোরী আত্মহত্যা করেছে।

‘ব্লু হোয়েল গেম’র কথা মনে আছে? যা খেলতে খেলতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তরুণ প্রজন্মের আত্মহত্যার হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। ওই প্রাণঘাতী ‘গেম’ দাবানলের বেগে প্রায় গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল ‘ডার্ক ওয়েব’র মাধ্যমে।

সেই ‘ব্লু হোয়েল’র জায়গা নিয়েছে এখন ‘মোমো চ্যালেঞ্জ সুইসাইড গেম’। ব্রিটেনের একটি ওয়েবসাইট ‘দ্যসান.কো.ইউকে’ জানাচ্ছে, সেই প্রাণঘাতী ‘গেম’ ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানি ও নেপালে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউজ.কম.এইউ এক প্রতিবেদনে বলছে, আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেসে ‘মোমো চ্যালেঞ্জ সুইসাইড গেম’র ফাঁদে পড়ে আত্মঘাতী হয়েছে ১২ বছরের এক কিশোরী। পুলিশ বলছে, হোয়াটসঅ্যাপে ‘মোমো’র ছবি শেয়ার করার কিছুক্ষণের মধ্যে তার বাড়ির পেছন দিকের জমিতে ১২ বছরের মেয়েটির মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।

‘মোমো’ কী?

‘মোমো’ একটি মেয়ের ছবি। যার দু’টি চোখ কোটর থেকে ঠেলে বেরিয়ে আসছে। তার পা দু’টি পাখির মতো। পায়ের আঙুল ও নখগুলো বড় বড়। মুখ অসম্ভব রকমের চওড়া। মাথা লম্বা। চুল ঘন কালো। দুই কানের পাশ দিয়ে তা অনেক নিচু পর্যন্ত নেমেছে। মাথার ওপরের দিকটা দেখলে মনে হবে, টাক আছে। তারই মাঝে কিছুটা জায়গা ছেড়ে ছেড়ে রয়েছে চুল।

মোমোর এই ছবি এঁকেছিলেন এক জাপানি শিল্পী। মিদোরি হায়াশি। দ্যসান.কো.ইউকে বলছে, শিল্পী হায়াশি কোনোভাবেই এই আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়া গেমের সঙ্গে জড়িত নন। ২০১৬ সালে টোকিওর ‘ভ্যানিলা গ্যালারি’তে একটি শিল্প প্রদর্শনীর জন্যই ওই ‘মোমো’র ছবি এঁকেছিলেন হায়াশি।

কোন ফোন নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়ে এই গেম?

এখন পর্যন্ত যতটুকু জানা যাচ্ছে, হোয়াটসঅ্যাপের এই ‘গেম’টি জাপানের আইএসডি কোড-সহ ৩টি ফোন নম্বরের। আর কলম্বিয়ার আইএসডি কোড-সহ ২টি এবং মেক্সিকোর আইএসডি কোড-সহ আরও একটি নম্বরের সঙ্গে সংযুক্ত।

কোথায় শুরু এই গেমের?

মেক্সিকোর একটি পুলিশ ইউনিট যারা অনলাইন অপরাধ নিয়ে কাজ করে; তারা বলছে, এটা শুরু হয় ফেসবুকে। কেউ কেউ একে অন্যকে প্রলুব্ধ করে একটি অপরিচিত ফোন নম্বরে ‘কল’ করার জন্য। তবে সেখানে একটি সতর্ক বার্তা জুড়ে দেয়া ছিল।

কেন এই ‘গেম’ অত্যন্ত বিপজ্জনক? মেক্সিকোর পুলিশ বলছে, অন্তত ৫টি কারণে মোমোকে এড়িয়ে চলা উচিত।

১) ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হতে পারে।

২) হিংসা, এমনকি আত্মহত্যায় প্রলুব্ধ করে।

৩) ব্যবহারকারী নানা রকমের হয়রানির শিকার হতে পারেন।

৪) হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা খোয়া যেতে পারে।

৫) ব্যবহারকারী মানসিক ও শারীরিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। তিনি উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও অনিদ্রাজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।