ভারতে বৃষ্টি-বজ্রপাতে ৪৭ জনের মৃত্যু

রোববার বৃষ্টি এবং বজ্রপাতে ভারতের উত্তর, পূর্ব এবং দক্ষিণাঞ্চলে কমপক্ষে ৪০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২৮ জন। অপরদিকে অন্ধ্রপ্রদেশে নয়জন, তেলেঙ্গানায় তিনজন, পশ্চিমবঙ্গে ১২ জন এবং দিল্লিতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

উত্তর প্রদেশের মুখ্য সচিব (তথ্য) অবনীশ অস্থি জানান, ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ২৮ জন আহত হয়েছেন এবং ৩৭ টির মতো ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বরাত দিয়ে তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের সব জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, কমিশনারদের ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত সহায়তা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া দপ্তর। ঝড়-বৃষ্টিতে এখন পর্যন্ত উত্তর প্রদেশেই মৃত্যুর সংখ্যা সর্বোচ্চ। সামবালপুরে বজ্রপাতের কারণে আগুনের সূত্রপাত হওয়ায় প্রায় ১শ বাড়ি পুড়ে গেছে।

অন্ধ্রপ্রদেশের কয়েকটি জায়গায় বজ্রপাতে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই শ্রীকাকুলাম জেলার। তেলেঙ্গানায় তিনজন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় কর্মকর্তারা।

পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণাঞ্চলে বজ্রপাত এবং ঝড়ে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে চারজনই শিশু। অপরদিকে দিল্লিতে এক নারীসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সরকারি কর্মকর্তারা জানান, ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে পশ্চিমবঙ্গে ১২ জন মারা গেছেন।

এর মধ্যে হাওড়া জেলায় ৫ জন, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৪পরগনা এবং নদিয়া জেলায় দুইজন করে মোট ৬ জন এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় একজন। এসব স্থানে আহত হয়েছে ১৫ জন। হাওরা জেলায় নিহতের মধ্যে ৪ শিশু রয়েছেন যাদের বয়স ৮ থেকে ১২ বছরের মধ্যে।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি একটি নিউজ চ্যানেলকে বলেন, ‘প্রকৃতির উপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। যারা মারা গেছেন আমরা তাদের ফিরিয়ে দিতে পারব না। তবে আমাদের সরকার হতাহতের পরিবারের পাশে দাঁড়াবে এবং তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।’

খবরে বলা হয়, রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে রাজধানী দিল্লি ও আশপাশের রাজ্যগুলোতে আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে যায়। পরে শুরু হয় ঝড়-বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি। এ সময় ঘণ্টায় ১০৯ কিলোমিটার বেগে ছড়ো হাওয়া বয়ে যায়। ঝড় বৃষ্টিতে বিমান, রেল ও মেট্রা চলাচল বিঘ্নিত হয়ে। গাছ উপরে ও দেয়াল ধ্বসে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

রোববার সন্ধ্যায় দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সব কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। ৭০টির বেশি বিমানের ফ্লাইট অন্যত্র অবতরণ করানো হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টিতে দিল্লিত মেট্রো সেবাও ব্যহত হয়েছে।

চলতি মাসের শুরুতে ঝড়-বৃষ্টিতে উত্তর প্রদেশ এবং রাজস্থানসহ ভারতের পাঁচ রাজ্যে একশোর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং গাছ-পালা উপড়ে পড়েছে।