মরণের পর আবার কিসের পুরস্কার?

মরণের পর আবার কিসের পুরস্কার? কাকে খুশি করার জন্য এই পুরস্কার? ‘সারা জীবন কাজ করে গেলাম, কিন্তু কোনো সম্মাননা পেলাম না। আমি সরকারের কাছে দাবি জানাব, মরণোত্তর সম্মাননা বন্ধ করা হোক। কাউকে যদি পুরস্কার দিতে চান, তবে তা জীবদ্দশায় দিন। যেন এই সুখটাকে বুকে নিয়ে সে মারা যেতে পারে। সারা জীবন খবর নিলেন না, আর মরার পর পুরস্কার দেওয়ার সময় তার প্রশংসা করলেন। এতে করে তার কী লাভ হলো? বরং আপনারাই প্রশংসা করে নিজের প্রচার করছেন।’

সম্প্রতি এফডিসিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নৃত্য পরিচালক আমির হোসেন বাবুর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা শেষে এভাবেই নিজের ক্ষোভের কথা প্রকাশ করলেন নায়িকা অঞ্জনা।

নৃত্য পরিচালক আমির হোসেন বাবুকে নিয়ে অঞ্জনা বলেন, ‘বাবুকে নিয়ে আমরা এই স্মরণসভায় অনেকেই অনেক কথা বলেছি। কিন্তু সে যখন হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে লড়ছিল, আমরা কতটা পাশে দাঁড়াতে পেরেছি? দুদিন আগে চলে গেলেন আমাদের রাণী সরকার আপা। আমরা কতটা খবর রেখেছি তাঁর? মৃত্যুর কয়েক দিন আগে আমি তাঁর নতুন বাসায় গিয়েছিলাম। অনেক সময় আড্ডা দিয়েছি।

আমরা জানি, তিনি কীভাবে শেষ কটা দিন পার করেছেন। হয়তো দুদিন পর উনার জন্য মিলাদ পড়ানো হবে। আশপাশের সবাই দোয়া পড়ে বিরিয়ানি খাবে। জীবদ্দশায় তিনি কয় বেলা না খেয়ে ছিলেন, তার খবর কি আমরা নিয়েছি?’

অঞ্জনা আরো বলেন, ‘মৃত্যুর পর স্মরণসভা না করে জন্মদিনটিতে কেক কাটুন, শুভেচ্ছা জানান। সম্মান দেখান যেন আরো কিছুদিন সাহস নিয়ে স্বস্তির সাথে বাঁচতে পারি। জীবনে যা করেছি তার জন্য নিজের মধ্যে যেন গর্ব অনুভব করতে পারি। এতে করে শান্তি নিয়ে হয়তো আরো দুদিন বেশি বাঁচার শক্তি পাব।’

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এই স্মরণসভায় অঞ্জনা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পরিচালক শাহ আলম কিরণ, পরিচালক শিল্পী চক্রবর্তী, নায়ক আলমগীর, ওমর সানি, জায়েদ খান, ক্যামেরাম্যান এ আর জাহাঙ্গীর, নৃত্যপরিচালক জাভেদ প্রমুখ।