মিয়ানমার সেনাপ্রধানসহ ২০ জনকে নিষিদ্ধ করেছে ফেসবুক

রাখাইনে গণহত্যা এবং বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য প্রচারের অভিযোগে মিয়ানমার সেনাপ্রধানকে নিষিদ্ধ করেছে ফেসবুক। ফেসবুকের পক্ষ থেকে সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

রাখাইনে রোহিঙ্গা সংকটের জন্য জাতিসংঘ প্রতিবেদনে মিয়ানমার সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাংকে দায়ী করার পর এ পদক্ষেপ নিয়েছে ফেসবুক।

একই অভিযোগে সেনাপ্রধান ছাড়াও মিয়ানমারের আরও ১৭ ব্যক্তির ফেসবুক আইডি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া ইনস্টাগ্রামের একটি অ্যাকাউন্ট ও ৫২টি ফেসবুক পেজ বন্ধ করা হয়েছে।

বিবৃতিতে ফেসবুক জানিয়েছে, আমরা মিয়ানমারের সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মি অং হ্লাংসহ মোট ২০ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ফেসবুকে নিষিদ্ধ করছি। সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় উত্তেজনা যেন আর বৃদ্ধি না পায় সে জন্য এই সিদ্ধান্ত।’

বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘চলতি বছরের শুরু থেকেই মানবাধিকার বিবেচনা করে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। অনেক মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করায় এটা আমাদের বিশাল দায়িত্ব। আমরা ভবিষ্যতে আরও সতর্ক থাকতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’

নিষিদ্ধ হওয়ায় পেজগুলোর মধ্যে ৪৬টি পেজ ও অ্যাকাউন্টগুলোর মধ্যে ১২টি অ্যাকাউন্ট মিয়ানমার গণহত্যায় সংগঠিত হওয়ায় সহযোগিতা করেছিল বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যায় দেশটির শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনার পরামর্শ দিয়েছে জাতিসংঘ। গঠিত স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন।

জাতিসংঘ গঠিত স্বাধীন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের এক প্রতিবেদনে এ সুপারিশ করার পরই ফেসবুক এ পদক্ষেপ নিয়েছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী `গণহত্যার অভিপ্রায়’ থেকেই রাখাইনের অভিযানে রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে।

আইন প্রয়োগের নামে ভয়ঙ্কর ওই অপরাধ সংঘটনের জন্য মিয়ানমারের সেনাপ্রধান এবং জ্যেষ্ঠ পাঁচ জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি করার সুপারিশ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার ওই প্রতিবেদনে রাখাইনের পাশাপাশি শান ও কাচিন অঞ্চলেও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ সংঘটনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

সেখানে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চির বেসামরিক সরকার বিদ্বেষমূলক প্রচারকে উসকে দিয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ আলামত ধ্বংস করেছে এবং সেনাবাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধ থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

প্রতিবেদনের শেষে বলা হয়েছে, এই প্রতিবেদনে মিয়ানমারের শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের বিচার এবং তদন্তের জন্য যথেষ্ট তথ্য রয়েছে, যার মাধ্যমে একটি উপযুক্ত আদালত রাখাইন রাজ্যে যে গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে তা নির্ধারণ করতে পারেন।