মোদির নিজের গ্রামেই এখনো সবার টয়লেট নেই!

২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হবার পর বলেছিলেন ‘ক্লিন ইন্ডিয়া মিশনের’ কথা- ভারতের সব বাড়িতে টয়লেট থাকতে হবে। মোদির জন্ম হয়েছিল গুজরাটের মেহসানা জেলার ভাদনগর গ্রামে।

এই গ্রামকে এখন ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্থান হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। কিন্তু মোদি তিন বছর প্রধানমন্ত্রী সেই গ্রামে কি বাড়িতে বাড়িতে টয়লেট হয়েছে?

বিবিসি হিন্দির প্রিয়াংকা দুবে সেই গ্রাম ঘুরে দেখেছেন- সেখানকার নারীদের এখনো একটাই চাওয়া-তার তা হলো, একটি টয়লেট।

‘আমাদের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল যে আমরা মাথার ওপর ছাদ আর টয়লেট পাবো। কোনোটাই পাই নি’- বললেন ওই গ্রামের নির্মলা বেন। তার কথা, মোদির সরকার কথা রাখেনি।

রোহিত ভাস নামে একটি পাড়া আছে এখানে- তাতে বড় সংখ্যায় দলিতরা বাস করেন। এখানে আমি আমার মোবাইল ফোনে একটি মেসেজ পেলাম: ‘আপনি এখন ভাডনগর ওয়াইফাই জোনে ঢুকেছেন। ‘

ওয়াই ফাই দেখা গেল ভালোই কাজ করছে। কিন্তু আমি যখন টয়লেটের কথা জিজ্ঞেস করলাম, তখনই ব্যাপারটা অন্য রকম হয়ে উঠতে শুরু করলো।

আমাকে একটা মাঠে নিয়ে গেল কয়েকজন ছাত্রী। বললো, প্রতি সকালে এখানেই তারা মলত্যাগ করতে আসে।

মণি বেন নামের এক বয়স্ক নারী একটি লাল টিনের ক্যান তুলে দেখালেন। এটিতে পানি ভরেই প্রতিদিন তাকে মাঠে যেতে হয়।

রোহিত ভাসে এখনো পুরুষ ও নারীদের জন্য দুটি পৃথক মাঠ আছে মলত্যাগের জন্য। বোঝা গেল, ভারতের সরকার গ্রামে গ্রামে টয়লেট তৈরির জন্য যে এক কোটি ৯ লাখ রুপি বরাদ্দ করেছে- তা প্রধানমন্ত্রী মোদির নিজের গ্রামেই পৌঁছায় নি।

দক্ষ বেনের বয়স ৩০ বছর। তিনি বললেন, এ গ্রামে ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে তরুণী মেয়ে পর্যন্ত সবাই উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ করে।

ত্রিশ হাজার লোকের এই পৌরসভায় ৫০০টি বাড়িতে কোন টয়লেট নেই। পয়ঃনিষ্কাশনের ড্রেনগুলো সব খোলা। অনেক নালা ময়লায় বন্ধ হয়ে গেছে।

গত মাসে নরেন্দ্র মোদি এখানে সফরে এসেছিলেন। তবে সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় কি আছে না আছে- তা নিয়ে এখানকার নারীদের কোন ধারণা নেই।

তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটিই জিনিস চান-টয়লেট । এটাই আসন্ন নির্বাচনে সবচেয়ে বড় ইস্যু তাদের চোখে।
প্রকাশ্যে মলত্যাগ করা একটা অপমানজনক এবং মর্যাদাহানিকর বিষয়, বললেন নারীদের একজন।