মোবাইলে মগ্নতাই দুর্ঘটনার কারণ

ভারতের অমৃতসরে ট্রেনে কাটা পড়ে এখন পর্যন্ত ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরও প্রায় শতাধিক মানুষ। শুক্রবার সন্ধ্যায় অমৃতসরের যোধা ফটকের কাছে রেল লাইনের কাছে রাবণ বধের অনুষ্ঠান চলছিল। ভিড় এতটাই বেশি ছিল যে, রেললাইনের উপর উঠে অনুষ্ঠান দেখতে শুরু করেন অনেকে।

রাবণের কুশপুত্তলিকা দাহের সময় বাজির শব্দে অন্য কোনো আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল না। এ কারণে ট্রেনের হুইসেল কেউ শুনতে পায়নি। ফলে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষজনের উপর দিয়ে চলে যায় ট্রেন।

উৎসবের কোনও মুহূর্তই ছাড়া যাবে না। সমস্ত রেকর্ড করে রাখতে হবে মোবাইলে। তাই কোনওদিকেই ভ্রুক্ষেপ ছিল না কারো। হাতের মোবাইলে চলছিল রেকর্ডিং। কেউ আবার প্রিয়জনকে নিয়ে আসতে পারেননি উৎসবে। তাই মোবাইলে ভিডিও কল করে জ্বলন্ত রাবণ দেখাচ্ছিলেন তারা।

কেউ আবার আরও এগিয়ে ছিল। সরাসরি ফেসবুক থেকে লাইভ করে দেখাচ্ছিলেন আগুনে পোড়া রাবণ। সেই উৎসবের ঘোরে কারো খেয়াল নেই যে অজান্তেই তারা এসে দাঁড়িয়েছেন দুরপাল্লার ট্রেন চলে এমন জায়গায়। ট্রেন আসার আগে তাই চালক বহুবার হর্ন দিলেও তারা শুনতে পেলেন না মোটেও। এমনই মগ্ন হয়ে রইলেন মোবাইলে।

ফলে ট্রেন উঠে গেল ভিড়ের মধ্যে। মুহূর্তের মধ্যেই উৎসবে বেজে উঠল বিষাদের সূর। ট্রেনের নিচে চাপা পড়ে মৃত্যু হলো অসংখ্য মানুষের।

কিন্তু কেন এমন হলো? অনেকেই বলছেন মোবাইলের অত্যাধিক ব্যবহার নানা সময় একাধিক দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায়ই খবর পাওয়া যায়, সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনে, নদীতে ডুবে বা রাস্তায় অনেকের মৃত্যু হয়।

কিন্তু মোবাইলে উৎসবের মুহূর্ত ধরে রাখার হিড়িক এই প্রথম। আর সেই কারণেই অমৃতসরে এতবড় কাণ্ড ঘটে গেছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। মোবাইলে এমন মগ্ন ছিলের দর্শকরা যে খেয়াল ছিল না কখন রেল লাইনের উপর তারা উঠে এসেছেন। আর যখন ঘাড়ের কাছে ট্রেন এসে পড়েছে, তখন আর কোন উপায়ও ছিল না বাঁচার।