রুশ অস্ত্র কেনায় চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্রের

রাশিয়ার যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র কেনায় চীনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সেইসঙ্গে এই কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত থাকায় রাশিয়ার ৩৩ কর্মকর্তাকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

বিবিসি বলছে, বৃহস্পতিবার ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ইউক্রেন ইস্যু এবং মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপের অভিযোগের কারণে মস্কোর ওপর ওয়াশিংটন যে অবরোধ আরোপ করেছে, তা অনুযায়ী এ ধরনের কেনাবেচা (চীনের অস্ত্র কেনা) আপত্তিজনক (অবরোধের লঙ্ঘন)।

প্রসঙ্গত, চীন সম্প্রতি রাশিয়া থেকে ১০টি সুখই সু-৩৫ যুদ্ধবিমান এবং এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কিনেছে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে ইউক্রেনে রাশিয়া হস্তক্ষেপ করলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে। ২০১৬ সালে মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ এবং সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে রাশিয়ার অব্যাহত সামরিক হস্তক্ষেপে সেই সম্পর্ক আরো খারাপ অবস্থায় গেছে।

খবরে বলা হয়েছে, চীনের অস্ত্র কেনাবেচার প্রতিষ্ঠান ইকুইপমেন্ট ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্ট (ইডিডি) এবং এর প্রধান লি শাংফুকে সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞায় টার্গেট করা হয়েছে। চীনের এই প্রতিষ্ঠানটি রাশিয়ার সরকারি অস্ত্র রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান রমোব্রোনএক্সপোর্টের সঙ্গে লেনদেন করেছে।

এদিকে, যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন- রাশিয়ার সামরিক ও গোয়েন্দা বাহিনীর এমন ৩৩ কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

মার্কিন আইন অনুযায়ী, চীন ও রাশিয়ার ওইসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কোনো সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রে থাকলে তা জব্দ করা হবে। সেইসঙ্গে তাদের সাথে কোনো লেনদেন বা ব্যবসা করতে পারবে না আমেরিকান কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান।

এদিকে, ফ্রাঞ্জ ক্লিন্টসেবিচ নামে রাশিয়ার এক রাজনীতিবিদ দেশটির গণমাধ্যম ইন্টারফ্যাক্সকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার অস্ত্র বিক্রিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না।

এইসব সামরিক সরঞ্জাম চীনের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেন ওই রাজনীতিবিদ।

চ্যাটহাম হাউজের সর্বশেষ প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, রাশিয়ান অস্ত্রের অন্যতম মার্কেট হলো এশিয়া। ২০০০ সাল থেকে রাশিয়া তার ৭০ শতাংশ এশিয়ার দেশগুলোতেই বিক্রি করেছে।

আর এশিয়ায় রুশ অস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে ভারত, চীন ও ভিয়েতনাম।

উল্লেখ্য, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ নিয়ে যখন ব্যাপক কূটনৈতিক উত্তেজনা চলছে, তখন বেইজিংয়ের ওপর নতুন করে অস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে এমন নিষেধাজ্ঞা দিলো ওয়াশিংটন।