১৫ বছর পর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের কী হবে?

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের আগেই বলা হয়েছিল এটি কার্যকর থাকবে ১৫ বছর। সেই হিসাবে রাশিয়া থেকে অরবিটাল স্লট বা কক্ষপথ কেনা হ  আমরা ১৫ বছর অপেক্ষা করবো না।

তিনি বলেন: প্রথমত, এই স্যাটেলাইটের বিকল্প ব্যবস্থা দরকার। এর কোনো যান্ত্রিক কারণে ত্রুটি দেখা দিলে সেটার ব্যাকআপ দিতে হবে। সেটা আমাদের না থাকলে অন্যদের থেকে নিতে হবে।

‘‘দ্বিতীয়ত, স্যাটেলাইট রাতারাতি বানানো যায় না। ১৫ বছর পরে বানিয়ে উৎক্ষেপণ করবো সেটা হবে না। সেজন্য এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। মানসিক প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ কবে, কোথায়, কিভাবে হবে সেই প্রস্তুতি নিতে হবে এখনই।’’

বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস-২০১৮ কে সামনে রেখে বুধবার চ্যানেল আইতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় গ্রামীণফোনের কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান মাহমুদ হোসেইন এবং বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন: ২০০৯ সাল থেকে এই পর্যন্ত যে পরিমাণ সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি, সেক্ষেত্রে একটি বড় মাইলফলক বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট। এটা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা এবং জাতীয় গর্বের বিষয়।

‘‘স্যাটেলাইট টিভি স্টেশনগুলো বিদেশের স্যাটেলাইট ভাড়া করে চালায়। এতে বৈদেশিক মুদ্রা অপচয়ের ব্যাপার থাকে, সঙ্গে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিষয়ও থাকে। আমি যখন আমার দেশের স্যাটেলাইট ব্যবহার করি তখন তথ্যগুলো আমার কাছে থাকে। আর আমরা যখন একাধিক দেশের স্যাটেলাইট ব্যবহার করি তখন তথ্য তাদের কাছে চলে যায়।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- আমরা যে ব্যবস্থায় টেলিসংযোগ বা মোবাইল ইন্টারেনেট ব্যবহার করছি, যেমন তারের মাধ্যমে। সেখানে কিছু কিছু জায়গায় প্রচলিত পদ্ধতিতে ইন্টারনেট যেতে পারছে না। সেখানে সমাধান স্যাটেলাইট। নিজের স্যাটেলাইট না থাকলে আমাদের অন্য দেশের স্যাটেলাইট ব্যবহার করতে হয়। মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পরে আমার চ্যালেঞ্জ ছিলো ২শ’ ২৬টি ইউনিয়নে স্বাভাবিকভাবে ইন্টারনেট পৌঁছাতে না পারা। সেখানে স্যাটেলাইট খুব প্রয়োজন ছিলো। তাই এই স্যাটেলাইট যেমন আমাদের গর্ব, তেমনই শূণ্যস্থান পূরণ’, বলেন মোস্তাফা জব্বার।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সম্পর্কে তিনি বলেন: ৩ মাসের মধ্যে আমরা এই স্যাটেলাইটের সুবিধা পাওয়া শুরু করবো। স্যাটেলাইট এরই মধ্যে কক্ষপথে এসে বসেছে। আমরা সংকেত পাওয়াও শুরু করেছি। ভূ উপগ্রহ কেন্দ্র অনুভব করছে যে স্যাটেলাইট বসেছে। তবে এটাকে আরো কার্যকর করার সময়সীমা হচ্ছে তিন মাস। সেই হিসেবে হয়তো তিন মাসে কাজ করা শুরু করবে।

স্যাটেলাইটের অর্থনৈতিক বিনিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন: স্যাটেলাইট প্রেরণে যে বিনিয়োগ সেই বিনিয়োগের টাকার হিসাব রাষ্ট্র সবসময় করে না, করা উচিতও না। একই দৃষ্টান্ত দেখা যায় শিক্ষাক্ষেত্রেও। তারপরও আমাদের বর্তমানে যে অবস্থান আছে তাতে সর্বোচ্চ সাত বছর সময় লাগতে পারে বিনিয়োগ তুলে আনার জন্য।

‘তাহলে আরো ৮ বছর থেকে যায় স্যাটেলাইট থেকে সুফল পাওয়ার জন্য। পদ্মা সেতু যেমন আমাদের গর্বের অংশ, তেমন এটাও তারপরও সেটা যেন বাণিজ্যিকভাবে সফল হয় সেটা নিয়েও আমরা কাজ করছি।’