চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে পানি নিষ্কাশনের অভাবে অনাবদি পড়ে আছে ১শ একর কৃষি জমি

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত জলাবদ্ধতা ও শুষ্ক মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় দীর্ঘ তিন দশক ধরে শষ্য আবাদের অনুপযোগী হয়ে পরিত্যক্ত ভাবে পড়ে আছে ১শ একর কৃষি জমি। জমিতে ফসল আবাদ করতে না পেরে হাহাকার করছে মিরসরাই সদর ইউনিয়ন ও পৌর সদরের দুই শতাধিক কৃষক।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হতদরিদ্র কৃষকদের পরিবারের খাদ্য শষ্যে জোগানদাতা কৃষি জমি পরিত্যক্তভাবে পড়ে থাকায় অনেক নি¤œ আয়ের কৃষক জীবীকার তাড়নায় জমি বিক্রি করে ভূমিহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অন্যদিকে বর্ষার মৌসুমে অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে পানি নিষ্কাশনের পথ সংকোচিত হওয়ায় নিমজ্জিত হয়ে ক্ষতিতগ্রস্থ হন আসপাশের প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দা। তাদের জমি রক্ষায় পানি নিষ্কাশনের সরকারি ভাবে কার্যকর প্রদক্ষে চান স্থানীয়রা।

কৃষকদের দাবি অতি দ্রæত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম হ্রদ মহামায়া লেকের পানি ড্রেনের মাধ্যমে কৃষি জমিতে আনা বা সরকারি ভাবে গভির নলকূপ স্থাপরেন মাধ্যমে সেচের ব্যবস্থা করা গেলে পুনরায় চাষাবাদের আওতায় আসতে পারে পরিত্যক্ত ভাবে পড়ে থাকা এসব কৃষিজমি। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে চট্টগ্রাম জেলা কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে লিখিত আবেদন করেছেন স্থানীয় কৃষকেরা।

মিরসরাই সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাফর আহম্মদ চৌধুরী কৃষকদের সমস্যা সমাধানে মিরসরাই ওয়ার্লেস এলাকায় পানি নিষ্কাশনের জন্য ফাইপ লাইন স্থাপন করলেও যা পানির ¯্রােতের তুলনায় অপ্রতুল।

স্থানীয় মুকছুদ, ইমাম হোসেন, অসীম দে ও উজ্জল নাথ সহ একাধিক কৃষক বলেন, পানির সরবরাহ ব্যবস্থা করা গেলে পরিত্যক্ত জমিতে সমন্বিত বোরো ধান, সবজি, মৎস্য চাষ ও ফলজ বাগান কার সম্ভব হবে। জমিগুলোও আবাদের আওতাভুক্ত হবে। মিরসরাইয়ে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য চলতি মৌসুম থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিনীতি অনুরোধ করছি।

কিছমত জাফরারাবাদ এলাকার বাসিন্দা মীর হোসেন বলেন, মিরসরাই সদর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পূর্ব কিছমত জাফরাবাদ এবং মিরসরাই পৌরসভার ২ নং তারাকাটিয়া গ্রামে প্রায় ১০ হাজার মানুষের বসবাস। কিছমত জাফরাবাদ মৌজায় মিরসরাই আবাসন প্রকল্পসহ এখানকার ১০০ একর জমি দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছরের মত বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত জলাবদ্ধতা এবং শুষ্ক মৌসুমে পানি সেচের ব্যবস্থা না থাকায় এই বিলটির ভূমি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে। এ সমস্যা সমাধানে সরকারি ভাবে সুদৃষ্টি প্রয়োজন।

মো হারুন, নুর নবী সহ একাধিক বাসিন্দা ও কৃষক বলেন, মিরসরাই আবাসন প্রকল্প, জাফরাবাদ বিল ও মাছুম্মা বিলে সমন্নিত চাষাবাদ কারার লক্ষে সুফিয়া রোডস্থ গুলিস্থান পেট্রোল পাম্প পাম্পের উত্তরে অবস্থিত এম. এইচ.বি.আই ব্রিকফিল্ডের মধ্যে দিয়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে মহামায়া বারোমাসি ছাড়া থেকে পানির ব্যবস্থা করা গেলে পরিত্যক্ত জমিগুলো প্রাণ ফিরে পেয়ে পাবে। চাষাবাদ করা গেলে দেশের খাদ্য ও আমিষের চাহিদা পূরনের পাশাপাশি কৃষকরা স্বাবলম্বী হবে।

এ বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিন বলেন, কৃষকদের দেওয়া একটি লিখিত আবেদন পেয়েছি। অনাবাদী জমিগুলো চাষাবাদের আওতায় নিয়ে আসতে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।