অনিয়মের তথ্য জানতে চাইলে সংবাদকর্মীকে হুমকি ব্যাংক কর্মকর্তার!

প্রান্তিক চাষিদের মৌসুমী ফসল গমের টাকা বিতরণে অনিয়মের তথ্য চাইলে পঞ্চগড় রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এর পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা তিরনই হাট শাখা এক কর্মকর্তা সংবাদকর্মীদের নানা ভাবে হেনস্থা ও হুমকি প্রদান করেছেন।

সাংবাদিকবৃন্দরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে ওই কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করে ব্যবস্থাপক বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেছেন।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ প্রতিদিন ও সংবাদ ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ ২৪ এর পঞ্চগড় প্রতিনিধি সরকার হায়দার, বাংলাভিশনের পঞ্চগড় প্রতিনিধি মোশারফ হোসেন, ভোরের দর্পন ও দীপ্ত টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি গোফরান বিপ্লব, আমাদের সময় ও ডেইলি অবজারভার প্রতিনিধি এস কে দোয়েল, সকালের সময়ের তেঁতুলিয়া প্রতিনিধি আতিকুজ্জামান শাকিল ওই ব্যাংকে দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য চাইতে ম্যানেজারের ধীমান রায়ের সাথে কথা বলছিলেন।

এসময় ব্যাংক কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান ম্যানেজারের কক্ষে প্রবেশ করে ইংরেজীতে হু আর ইউ বলে সম্বোধন শুরু করেন। পরে সে নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র নেতা দাবি করে বলেন তথ্য চাওয়ার আপনারা কে ? আপনারা তো কার্ড দেখিয়ে সাংবাদিকতা করেন। বেতন পান না। আপনারা এখানে প্রবেশ করার আগে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েছেন? একসময় তিনি উত্তেজিত হয়ে টেবিল থাপরিয়ে বলেন আপনারা … ছিড়াবেন। তাকে ম্যানেজার বার বার নিবৃত্ত করতে চাইলেও তিনি চিৎকার করতে থাকেন।

এসময় সাংবাদিকরা বলেন, আমরা নির্দিষ্ট একটি অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য চাইতে এসেছি। তথ্য না দিলে আমরা তথ্য ফরমে আবেদন করতে পারি। কিন্তু আমাদের সাথে আপনারা বিরুপ ব্যবহার করতে পারেন না। এ কথার প্রতি উত্তরে ওই কমকর্তা বলেন, আপনারা তো ১৫ শ টাকাও বেতন পান না। অনেক সাংবাদিক গ্রাজুয়েটও করেনি। আামি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ বছর সাংবাদিকতা করেছি। আমাকে সাংবাদিকতা শেখাবেন না। একপর্যায়ে তিনি আরও উত্তেজিত হয়ে উঠেন। পরে ব্যাংকের ম্যানেজার তাকে কক্ষ ত্যাগ করতে বললে তিনি কক্ষ ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যান।

বাংলাভিশনের সাংবাদিক মোশারফ হোসেন জানান, ওই কর্মকর্তার আচরণে আমরা হতভম্ব। দীর্ঘ দিনের সাংবাদিকতার জীবনে এরকম আচরণ দেখিনি।

ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে তেতুলিয়া জর্নালিষ্ট ক্লাব সহ সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বেশ কয়েকটি সংগঠন।

তেতুলিয়া জর্নালিষ্ট ক্লাবের আহবায়ক আশরাফুল ইসলাম বলেন ঘটনাটি দূ:খজনক। আমরা ওই কর্মকর্তার দ্রত অপসারন সহ বিচার দাবি করছি।

ড্রাগ ফ্রি বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক আতিকুজ্জামান শাকিল বলেন, ওই কর্মকর্তার আচরন সন্দেহজনক। তার আচরন সুস্থ মস্তিস্কের নয়। ম্যানেজার ধীমান রায় জানান ঘটনাটি অনাকাংখিত এবং দু:খজনক।

এ বিষয়ে কৃষি উন্নয়ন তেঁতুলিয়া শাখার ব্যবস্থাপক দিদারুল আলম জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি, এটার সত্যতা রয়েছে। তবে আমি ওখান থেকে আসার পর ঘটনাটি ঘটেছে। যা আমার সাথে সংশ্লিষ্টতা নেই বলে তিনি।

রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক পঞ্চগড় জেলার প্রধান শাখার ব্যবস্থাপক শফিউল হক জানান, মুঠোফোনে ঘটনাটি শুনেছি। আগামী রোববার এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।