অপরাধী যেই হোক তার বিচার হবে: সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার

সুনামগঞ্জের শাল্লায় ফেসবুক পোস্টের জেরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে হামলা-ভাচুরের ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকে গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান।

দায়ীদের ক্ষেত্রে কার কী দলীয় পরিচয় সেটাকে বিবেচনায় নেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

রবিবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, উত্তেজিত জনতা জড়ো হয়ে গ্রামের পাশে মিছিল-সমাবেশ করছে এমন খবর পেয়ে শাল্লা থানার ওসি এবং ইউএনও ঘটনাস্থলে যান। নোয়াগাঁও গ্রামের অবস্থান দাড়াইন নদীর পড়ে পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে লম্বালম্বি। পশ্চিমপাশের রাস্তায় উত্তেজিত জনতাকে থামান ওসি ও ইউএনও। কিন্তু পূর্বদিকে অরক্ষিত এলাকায় কিছু জনতা নদী পাড় হয়ে গ্রামে গিয়ে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। খবর পয়ে পুলিশ পূবদিকে গেলে দুস্কৃতিকারীরা পালিয়ে যায়। প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ার পরও দ্রুততম সময়ের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়। ঘটনার দুই ঘণ্টার মাথায় আমি ও জেলা প্রশাসক মহোদয়ও সেখানে যাই।

মূলত, ঘটনার দিন আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎক্ষণাৎ ভুমিকায় দুবৃত্তরা মানুষের জান-মালের ক্ষতি কম হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। ঘটনার সময় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে যে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে সেটা সম্পূর্ণরূপে অযৌক্তিক।

পুলিশ সুপার বলেন, এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামিসহ এ পর্যন্ত ৩৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তে যাদেরই সংস্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এক্ষেত্রে কার কী দলীয় পরিচয় সেটাকে বিবেচনায় নেওয়া হবে না।

প্রসঙ্গত, ১৫ মার্চ দিরাইয়ে সমাবেশ করে হেফাজতে ইসলাম। এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। পরদিন মামুনুলের সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন নোয়াগাঁওয়ের এক হিন্দু যুবক। এই স্ট্যাটাসের জেরে হিন্দু অধ্যুষিত ওই গ্রামটিতে হামলা চালিয়ে ৮৮ টি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এ ঘটনায় ৮০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত দেড় হাজার জনকে আসামি করে শাল্লা থানায় পৃথক দু’টি মামলা দয়ের হয়েছে।