অলৌকিকভাবে দাঁড়িয়ে গেছে ঝড়ে উপড়ে যাওয়া বটগাছ!

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য নওগাঁর রাণীনগরে ঝড়ে উপরে পরা একটি বটগাছ অলৌকিকভাবে অবিকলভাবে দাঁড়িয়ে গেছে।

বটগাছটি কাটার সময় দিনের বেলায় এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে রাণীনগর উপজেলার একডালা ইউনিয়নের যাত্রাপুর গ্রামে। ঘটনার পর থেকে প্রতিদিনই উৎসুক জনতা গাছটি একনজর দেখার জন্য ছুটে আসছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই গ্রামের মৃত যদু প্রামাণিক ছোটবেলা থেকেই জ্বীনের (স্থানীয় ভাষায় ‘মাদার’) প্রতি আছড় ছিল। মাঝে মধ্যেই তার ওপর ভর করতো জিন। প্রায় অর্ধশত বছর আগে জ্বীনে ভর করা অবস্থায় যদু প্রামাণিক ছোট একটি বটগাছ নিয়ে এসে রোপণ করেন।

ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলে মাদারের গাছ হিসেবে পরিচিতি পায় বটগাছটি। জিন বা মাদারের স্মরণে প্রতি বছর সেখানে মাদারের পালা গানের আসরও বসে। এছাড়া দূর-দূরান্তরের লোকজন নানা রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত ব্যাধি দূর করতে ওই গাছে মানত করতো।

অনেকের দাবি, এই গাছে মানত করে অনেক লোকজন রোগ থেকে মুক্তিও পেয়েছে।

গত মাসে সারা দেশে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে গাছটি উপড়ে পরে পার্শ্বে একটি পাকা ভবনের উপর পড়ে। এতে ওই ভবনের সিড়ি রুম এবং ছাদের কিছু অংশে ক্ষতিও হয়েছে।

কিন্তু গাছটি উপড়ে পরে গেলেও জ্বীনের ভয়ে কেউ ডালপালা পর্যন্ত কাটতে সাহস পায়নি ফলে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে গাছটি ওই অবস্থায় পড়ে থাকে। এরপর রোজার মাত্র একদিন আগে গাছ কাটা লেবার নিয়ে এসে গাছের ডালপালা কাটতে থাকে। গাছের মাথার অংশ কাটার সময় হঠাৎ করেই গাছটি অবিশ্বাস্যভাবে অবিকল পূর্বের ন্যায় দাঁড়িয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পরে থাকা গাছের ওপর একজন শ্রমিক বদনা হাতে দাঁড়িয়ে কাজ করছিলেন। কিন্তু গাছ দাঁড়িয়ে গেলেও তিনি গাছ থেকে পরেও যাননি এমনকি তার কোনো ক্ষতিও হয়নি।

ঘটনা জানাজানি হবার পর থেকেই প্রতিদিনই উৎসুক জনতা ছুটে আসছেন গাছটি এক নজর দেখার জন্য।

তবে অনেকে মনে করছেন, গাছটি উপড়ে যাবার সময় ডাল পালার কারণে মাথার অংশ অনেক ভারি ছিল। সেগুলো কেটে দিলে গোড়ার অংশ ভারি হওয়ায় গাছটি হয়তো দাঁড়িয়ে গেছে। তবে একদম আগের ন্যায় অবিকল দাঁড়িয়ে যাওয়া, গাছের শেখড়, গোড়ালি মিলে যাওয়াটাও অস্বাভাবিক বলে মনে করছেন তারা।

গাছের পাশের বাড়ির সুফিয়া বেওয়া জানান, বিয়ের পর থেকে তিনি এই গাছ দেখছেন, গাছের পাশে টয়লেট ছিল তাদের। রাত-বিরাত পর্যন্ত সেখানে চলাচল করলেও কোনো আলামত দেখতে পাননি তারা। তবে সেখানে লোকজন মানত করতো, প্রতিবছর মাদারের পালা গান বসে বলে জানান তিনি।

ওই গ্রামের বৃদ্ধ হেকমত আলী জানান, গাছটি অবিকল দাঁড়িয়ে যাওয়াটা একদম অস্বাভাবিক এবং অলৌকিক।

গাছের তদারককারী ও মাদারের পালা গানের আয়োজক সুরজান বেওয়া ও পুটি বেওয়া জানান, ওই গাছে মাদার বাস করে। প্রতি বছরই গাছের নিচে মাদার স্মরণে পালা গান করতে হয়, না করলে অনেক সমস্যা হয়।

তারা যুক্তি দিয়ে বলেন, একশত জন লোক এসে গাছটি খাড়া করতে পারবে না। যদিও পারে তাহলে অবিকল দাঁড়িয়ে রাখার ক্ষমতা নেই। তাদের পূর্ণ বিশ্বাস, গাছটি মাদারই দাঁড় করে রেখেছে।