আইএস সন্দেহে আটক কে এই বাংলাদেশি ছাত্রী?

অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে একজন নার্সকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগে বাংলাদেশি ছাত্রী মোমেনা সোমাকে শুক্রবার গ্রেফতার করে হয়। ‘ইসলামিক স্টেট-আইএস’র আদর্শে অনুপ্রাণিত’ হয়ে ২৪ বছর বয়সী সোমা তাদের বাসায় ঘুমন্ত রজার সিঙ্গারাভেলুর উপর ওই হামলা চালান বলে অভিযোগ করা হয়।

আংশিক স্কলারশিপ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে যাওয়া সোমার পরিবার তাকে সবসময় ‘ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট বা অসাধারণ মেধাবী ছাত্রী’ হিসেবেই জানেন। সোমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে তারা হতবুদ্ধি হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার দ্য এজ পত্রিকা।

আক্রান্ত ব্যক্তির পাঁচ বছরের মেয়ে জানিয়েছে, হামলা করার সময় সোমা বোরকা পরেছিল।

সোমাকে ‘স্বতঃপ্রণোদিত জঙ্গি’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তার বিরুদ্ধে একটি সন্ত্রাসী হামলা চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ার দ্য এজ পত্রিকা বাংলাদেশে বসবাসরত সোমার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

সোমার চাচা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তিনি সোমার গ্রেফতারের খবরে হতভম্ব হয়ে গেছেন এবং তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বিশ্বাস করতে তার কষ্ট হচ্ছে বলে দ্য এজকে জানান।

তিনি বলেন, ‘আমরা তার পরিবারের সদস্য হিসেবে মর্মাহত। সোমার বাবা তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করছে।’

সোমা লা ট্রোব ইউনিভার্সিটিতে ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়নের জন্য ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে মেলবোর্নে পৌঁছন। বিশ্ববিদ্যালয়টি তাকে ‘এক্সেলেন্স’ বা লেখাপড়ায় উৎকর্ষের জন্য ২৫% বৃত্তি প্রদান করেছিল।

আক্রমণ করার আগে সোমা সিঙ্গারাভেলুর সঙ্গে মাত্র এক দিন একই বাসায় বসবাস করেছে। তার পরিবার জানিয়েছে, সোমা বাংলাদেশে বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে এবং তার ইচ্ছা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া।

সোমার মা এক বছর আগে মারা গেছেন এবং তার বাবা একজন ইন্সুরেন্স কর্মকর্তা। সোমা এবারই প্রথম দেশের বাইরে গিয়েছে।

সোমার চাচা দ্য এজকে জানান, তিনি সোমার সঙ্গে শুক্রবার ভোরেও কথা বলেছেন। তখন সে জানিয়েছিল সব ঠিক আছে, আর সেখানকার মানুষজনও ‘ভালো’ ও ‘ভদ্র’।

তিনি বলেন, ‘তার মধ্যে কোনো উদ্বেগ ছিল না। সেখানে সে আরামদায়ক অবস্থাতেই ছিল। কী গোলমাল হয়েছে আমি জানি না।’

ভিক্টোরিয়া পুলিশ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি কমিশনার রস গেন্থার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সময় সোমার কিছু মন্তব্যের কারণে তারা মনে করছেন এটি সন্ত্রাসী হামলা ছিল। এরপর সেখানকার জয়েন্ট কাউন্টার টেররিজম টিম মামলাটির দায়িত্ব নেয়।

রয়্যাল মেলবোর্ন হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আক্রমণের শিকার ওই ব্যক্তির অবস্থা এখন শঙ্কামুক্ত।