আমার কিছু হলে ধরে নেবেন ওসমান পরিবার করেছে : শ্যামল কান্তি
নারায়ণগঞ্জে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ তুলে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান যাকে কান ধরে উঠবস করতে বাধ্য করেছিলেন সেই শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত বলেছেন, তার কিছু হলে ওসমান পরিবার দায়ী থাকবে। ঘুষ গ্রহণের মামলায় বেশ কয়েকদিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্তি পেয়ে তিনি এই কথা বলেন।
ঘুষ গ্রহণের মামলায় জামিন আদেশ পৌঁছার পর বিকাল পাচঁটা ৫৫ মিনিটে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান শ্যামল। এর আগে দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে তার আইনজীবী জামিন চাইলে আদালত দুই পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক ২০ জুলাই পর্যন্ত অর্ন্তবর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন।
গত ২৪ মে কারাগারে যাওয়ার সময় শ্যামলকান্তি বলে যান, তার এই অবস্থার জন্য প্রভাবশালী দায়ী। তবে সেদিন তিনি কারও নাম উল্লেখ করেননি। আর সাত দিন পর মুক্তি পেয়ে তিনি ওই প্রভাবশালী হিসেবে ওসমান পরিবারের নাম উল্লেখ করেন।
শ্যামল কান্তি বলেন, ‘আমার যদি কিছু হয় তবে ধরে নিতে ওসমান পরিবার করেছে। আমি দেশ রত্ন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সুবিচার চাই।’
ধর্ম নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্যের অভিযোগ তুলে শ্যামল কান্তিকে স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান ২০১৬ সালের ১৩ মে কান ধরিয়ে ওঠবস করান। এই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হলে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ওই ঘটনার পর বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ শ্যামলকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে।
এই ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে সেলিম ওসমানের বিরুদ্ধেও মামলা হয়। সম্প্রতি তিনি এই মামলায় ঢাকার একটি আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন।
কান ধরে উঠ-বসের ঘটনার দুই মাসের মাথায় ১৪ জুলাই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, শিক্ষার্থীকে মারধর ও শিক্ষক মোর্শেদাকে এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে তিনটি মামলার আবেদন হয় নারায়ণগঞ্জের আদালতে। আদালত ওই দিন বিকেলে শুনানি শেষে প্রথম দুটি মামলা খারিজ করে দেয়। আর ইংরেজি শিক্ষক মোর্শেদা বেগমকে প্রলোভন দেখিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে বন্দর থানা পুলিশকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন বিচারক।
এই মামলায় যে অভিযোগ আনা হয়, সেটি ঘটেছিল আরও দুই বছর আগে। বাদী অভিযোগ করেন, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তার কাছ থেকে শ্যামলকান্তি দুই লাখ ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন।
কারাগারে যাওয়া আগে শ্যামল কান্তি এই মামলাটিকে মিথ্যা দাবি করে বলেছিলেন, ‘একজন প্রভাবশালী ব্যক্তির কারণে আমাকে ষড়যন্ত্র ও পরিকল্পিতভাবে এই মামলা ফাঁসান হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে যে ঘুষের অভিযোগ আনা হয়েছে আমি কখনও এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই, আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। সকল কাজগপত্র আমার কাছে রয়েছে।’
কারা মুক্তির পর শ্যামল কান্তি বলেন, ‘প্রভাবশালী ওসমান পরিবার আমাকে কীভাবে অপমান করেছিল তা দেখেছেন। জেল থেকে মুক্তি পেলেও আমি আতঙ্কে আছি। কারণ আমার পুলিশ প্রটেকশন তুলে নেয়া হয়েছে। একজন বডিগার্ড দেয়া হয়েছিল, তা এখন দেবে কি তা নিয়ে সন্দিহান আছি।’
ঘুষ গ্রহণের মামলাটিকে মিথ্যা দাবি করে এটি প্রত্যাহার করে নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতির প্রতি আবেদন জানান শ্যামল কান্তি ভক্ত।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন