ইভিএম নিয়ে ভাবছে ইসি

দেশে বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একাদশ সংসদ নির্বাচন। বিএনপির ২০, আওয়ামী লীগের ১৪ দলের পর জাতীয় পার্টি গড়েছে ৫৮ দলের জোট। আগামী নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে কি হবে না তা নিয়েও রাজনৈতিক মহলে আলোচনা হচ্ছে। এর মধ্যে কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রযুক্তিটি নিয়ে ভাবছে। থমকে থাকা ইভিএম নিয়ে আলোচনার মধ্যে বর্তমান কমিশন প্রযুক্তিটির বিষয়ে নতুন করে উদ্যমী হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার কমিশন সভায় এ ব্যাপারে সার্বিক বিষয় উপস্থাপন করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে ইসি সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ জানান, দেশ যেখন ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে এগোচ্ছে তখন নির্বাচন ব্যবস্থাপনাও ডিজিটাইজড করার দিকে যেতে হবে। আগামীতে এ পদ্ধতি চালু করার চিন্তাভাবনা করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশনের সামনে ইভিএম’র প্রযুক্তিগত দিকগুলো উপস্থাপন করা হবে। কমিশনই এরপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

তিনি জানান, দেশের ১০ কোটি ১৭ লাখেরও বেশি ভোটারের তথ্য ভাণ্ডার রয়েছে। এ ডেটাবেজকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে নির্বাচন ব্যবস্থাপনাও ডিজিটাইজড করা যায় সে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে।

গত ১১ জানুয়ারি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ই-ভোটিং’ চালুর প্রস্তাব দিয়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ ধারাবাহিকতায় ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ই-ভোটিংয়ের প্রবর্তন করার পরিকল্পনা বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।’

অবশ্য তার পরদিনই প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পেছনে ‘দূরভিসন্ধি’ রয়েছে সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘জনগণের দৃষ্টিকে সিইসির দিক থেকে অন্যত্র সরানোর জন্য ই-ভোটিং ব্যবস্থা প্রধানমন্ত্রীর আরেকটি ম্যাজিক।’

নতুন কমিশন ভোট আয়োজনে তাদের কর্মপরিকল্পনাও তৈরি করছে। তাতে ডিজিটাল ভোটিং পদ্ধতি হিসেবে ইভিএম নিয়ে প্রস্তুতির জন্য সম্ভাব্য সময়সীমাও বণ্টন করছে।

এ অবস্থায় নতুন ইভিএম নিয়ে ভাবনার বিষয়ে ইসি সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ইভিএম বা যে নামেই বলি না কেন নতুন প্রযুক্তিটির সার্বিক বিষয় তুলে ধরা হবে। সেই সঙ্গে তরুণদের উদ্ভাবিত নতুন একটি অ্যাপস উপস্থাপন হবে। কমিশন তা অনুমোদন করলে পাইলটিং করা হবে। ছোট পরিসরে ব্যবহারে সফলতা পেলে পরবর্তী পদক্ষেপে বড় পরিসরে যাওয়ার চিন্তাভাবনা হবে। ইভিএমে কোনো ধরনের হ্যাকিং বা জাল-জালিয়াতির সুযোগ যেন না থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে। তারপরই এটা নিয়ে এগোতে হবে।’

ইসি সূত্র জানায়, বুয়েটের সহযোগিতায় ছোট পরিসরে ২০১০ সালে ইভিএম স্থানীয় নির্বাচনে চালু হওয়ার পর তাদের সঙ্গে বিভিন্ন কারণে দ্বন্দ্ব দেখা দেয় কমিশনের। যার ফলে ২০১৫ সালে এসে তা থকমে যায়। পরে কমিশন অন্যের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজেরাই এটি তৈরির উদ্যোগ নেয়। এ বিষয়ে গত বছর ১৯ সদস্যের একটি টেকনিক্যাল কমিটিও গঠন করেছিল বিগত কমিশন। সেই ধারাবাহিকতায় নিজেদের তৈরি ইভিএম নিয়ে কাজ করছে বর্তমান কমিশন।

কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন ইসির অধীনে আগামী বছরের ৩০ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।