ইমরান খানের সরকারের সঙ্গে কাজে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র

পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের পরপর এখন খুব শিগগির দেশটিতে গঠিত হতে যাচ্ছে নতুন সরকার। দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে আসন্ন নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে আগ্রহ পোষণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

শুক্রবার পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক সংবাদপত্র ডনের সূত্রমতে গতকাল বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ কথা জানায়।

বেসরকারিভাবে জানা আংশিক ফলাফলের ভিত্তিতে এখন পর্যন্ত ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ অন্য দলগুলোর চেয়ে অনেক এগিয়ে। তারাই সরকার গঠন করতে যাচ্ছে বলে প্রায় ধরেই নেওয়া হয়েছে।

দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘যেহেতু পাকিস্তান নতুন সরকারের নেতা নির্বাচন করতে যাচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির স্বার্থে সেই সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ পোষণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।’

নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, ‘পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন ও পর্যবেক্ষক দলের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রাথমিক ফল জানার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি।’

পাকিস্তানের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ডন আজ সকালে জানায়, ইমরানের দল ১১০টি আসন পেয়ে অন্যদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। এ ছাড়া নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন ৬৩টি আসন নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এ ছাড়া প্রয়াত বেনজির ভুট্টোর দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৪২টি আসন।

গতকাল ইমরান খান বলেন, ‘আল্লাহতায়ালার অশেষ রহমত, আমরা জয় পেয়েছি। ২২ বছর আগে আমি যে ইশতেহার তুলে ধরেছিলাম, আল্লাহ আমাদের তা বাস্তবায়নের সুযোগ করে দিলেন।’ তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, কেন আমি রাজনীতিতে প্রবেশ করেছিলাম, রাজনীতি ব্যক্তিগতভাবে আমাকে কিছু দিতে পারবে না। কিন্তু আমি চাই, আমার নেতা কায়েদে আজম মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ যে পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখেছিলেন, পাকিস্তান তা হয়ে উঠুক।’

অনিয়মের দাবি নাকচ করে সাবেক এই ক্রিকেট তারকা পাকিস্তানের এই জাতীয় নির্বাচনকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে নিরপেক্ষ’ বলেও দাবি করেন। বিরোধীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যদি আপনি মনে করেন যে নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে, তাহলে আমরা তদন্তের কথা বলব। এ ব্যাপারে আমরা আপনার পাশে আছি। আমি মনে করি, পাকিস্তানের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন। যদি কোনো দলের এতে সন্দেহ থাকে, তাহলে যেসব আসনের ব্যাপারে অভিযোগ থাকবে, সেগুলো নিয়ে তদন্ত হতে পারে।’

পিটিআইপ্রধান বলেন, ‘ধনীদের দিয়ে একটি দেশের জীবনযাত্রার মান স্বীকৃত হতে পারে না। গরিবরা কীভাবে জীবনযাপন করে, সেটাই বিবেচ্য। ধনীদের দ্বীপ আর গরিব মানুষের সমুদ্র নিয়ে কোনো রাষ্ট্র কখনো উন্নতি করতে পারে না।’

আগামী দিনগুলোর চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে ইমরান খান আরো বলেন, ‘সামনে আমাদের সুশাসন ও অর্থনৈতিক বিষয়ক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের অর্থনীতি এত খারাপ অবস্থায় আর কখনই আসেনি। এর প্রধান কারণ হচ্ছে, এই দায়িত্ব যাদের ওপর ছিল তারা তাদের কাজটি সঠিকভাবে করেনি।’