বেলকুচিতে বদি ফকিরকে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ইঞ্জিঃ আমিনুলের মদদে সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে আসন্ন ৮ মে প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী মোটরসাইকেল প্রতিকের প্রার্থী আলহাজ্ব বদিউজ্জামান ফকিরকে সন্ত্রাসী হামলা, হুমকি ধামকির অভিযোগ এনে অপর প্রতিদ্বন্দ্বী দোয়াত কলম প্রতিকের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আমিনুলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০২ মে) দুপুরে বেলকুচি প্রেসক্লাবে মোটরসাইকেল প্রতিকের প্রার্থী আলহাজ্ব বদিউজ্জামান ফকির অপর প্রতিদ্বন্দ্বী দোয়াত কলম প্রতিকের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মোটরসাইকেল প্রতিকের প্রার্থী বদিউজ্জামান ফকির অপর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন,

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেলকুচি উপজেলা জুড়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। নির্বাচনী মাঠে স্থানীয় সাংসদের শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিডিটুর জেনারেল ম্যানেজার অপারেশন ইঞ্জিঃ আমিনুল ইসলাম চেয়ারম্যান প্রার্থী তার সন্ত্রাসী বাহিনী ও কর্মী-সমর্থক ছাড়া কেউ নিরাপদ নয়।

আমার নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনায় প্রতিটি ধাপে আমাকে হামলা, মারপিট, ভাংচুর, হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে দশটার দিকে শাহাপুর ডিএসএস স্কুলের পথসভা শেষে বাড়ি ফেরার পথে বেলকুচি পৌর এলাকার চালা সাতরাস্তা মোড়ে ঈদগাহ মাঠের মোড় ঘুরে বেলকুচি সদর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে পৌছলে আমার গাড়ী বহরে হামলা চালানো হয়। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলামের প্রত্যক্ষ মদদে তার সন্ত্রাসী বাহিনী এই হামলা চালায়। এতে আমিসহ আমার আরও পাঁচ কর্মি-সমর্থক আহত হয়। বেলকুচিতে রক্তের বন্যা বইয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আমাকে নানাভাবে শাষায় আমিনুল ইসলাম। আমাকে শারিরিকভাবে আঘাত করে আমিনুল ইসলামের সন্ত্রাসী বাহিনী। আমি ও আমার কর্মীগণ মার খেয়ে আত্মরক্ষার জন্য বেলকুচি থানায় আশ্রয় নিলে সেখানেও হামলা চালানো হয়। বেলকুচি থানার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলেই আপনারা আমার কথার সত্যতা খুঁজে পাবেন। ইতিপূর্বে আজুগড়া মোড়ে পোষ্টার লাগাতে যাওয়া আমার কর্মিদের ধারালো অস্ত্রে দিয়ে আঘাত করে আহত করা হয়েছে। জামৈল বাজারে আমার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করা হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলামের প্রত্যক্ষ মদদ ও নির্দেশে এগুলো ঘটানো হচ্ছে। আমি নিরাপত্তা হীনতায় ভূগছি, তার সন্ত্রাসী বাহিনী সার্বক্ষণিক ভাবে নির্বাচনী কাজে বাঁধা দিচ্ছে।

জননেত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশেনা রয়েছে চলমান উপজেলা নির্বাচনে সংসদ সদস্যবৃন্দ কোন হস্তক্ষেপ করবে না, কোন প্রার্থীর পক্ষপাতিত্ব করতে পারবে না। কিন্তু এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

স্থানীয় সংসদ সদস্যের পরিবার তাদের প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারে বসাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বেলকুচিকে নিজেদের কোম্পানিতে পরিণত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। নিজেদের কোম্পানির বেতনভুক্ত কর্মকর্তাকে উপজেলা চেয়ারম্যান বানিয়ে বেলকুচির আওয়ামী রাজনীতির কবর রচনার পথে হাটছেন। সংসদ সদস্যের ভাই আব্দুল আলিম মন্ডল ও জুবায়ের মন্ডল, ব্যক্তিগত সহকারি সেলিম রাত-দিন সভা-সমাবেশসহ প্রচারনা চালাচ্ছে আমিনুল ইসলামের পক্ষে। তাকে এমপির পছন্দের প্রার্থী হিসেবে প্রকাশ্যে ঘোষনা করছে। নেতা-কর্মি, বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। সংসদ সদস্যের দুই ভাই ও সহকারি নির্বাচনী মাঠে নামলে এটা প্রমানিত হয় যে, সংসদ সদস্য একজন প্রার্থীর পক্ষ নিয়েছেন। সংসদ সদস্যের দুইভাই বেলকুচিতে পা রাখার সাথে সাথে তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে আমিনুল ইসলাম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী।

নির্বাচন কমিশনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করছি, বেলকুচি উপজেলা নির্বাচনকে সুষ্ঠ সুন্দর ও নিরপেক্ষ করতে সংসদ সদস্যের দুই ভাইয়ের বেলকুচি ত্যাগ করার বিকল্প নেই। নির্বাচন কমিশনের বিধি-বিধান ও রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্দেশনার ফাক গলিয়ে এই দুইজন মূলত সংসদ সদস্যের প্রতিনিধিত্ব করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। আমি এদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনসহ অবাধ-নিরপেক্ষ বেলকুচি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন সম্পন্ন কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।

এবিষয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলাম বলেন, আমার কর্মী সমর্থকদের উপর করায় থানায় আসলে অপর প্রার্থীর সাথে একটু বাকবিতন্ডা হয়।

তবে এব্যাপারে বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান বলেন, গতকাল বুধবার রাতে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আমিনুল ইসলামের কর্মী-সমর্থকেরা থানায় এসে হট্টগোল শুরু করে এবং সরকারি কাজে বাঁধা দেয়। পরে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী আব্দুল হামিদ আকন্দ, সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সুলতান মাহমুদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ প্রমূখ।