গ্রাহকদের ‘স্যার’ সম্বোধন করা ম্যানেজারের বদলীজনিত বিদায়

‘স্যার’ না ডাকলে অনেক সরকারি কর্মকর্তারা রাগ করেন আবার অনেকেই সেবাপ্রার্থীদের খারাপ আচরণ করে থাকেন, ব্যতিক্রমী একজন কর্মকর্তা যিনি ময়মনসিংহের শম্ভূগঞ্জ সোনালী ব্যাংক পিএলসি শাখা থেকে বদলীজনিত বিদায় নিয়েছেন। এরকম হৃদ্যতাপূর্ণ ব্যাংক ম্যানেজার হলেন খাইরুল আলম তুহিন।

তার বিদায়ে ব্যাংকের গ্রাহকদের অনেকেই আফসোস করছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে উক্ত ব্যাংকে গিয়ে দেখা যায় গ্রাহকরা ম্যানেজারকে বিদায় দিতে এসে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছেন।
ব্যাংকের গ্রাহক মোঃ নাজমুল হোসেন বলেন, ম্যানেজার ভাই খুব ভালো মানুষ ছিলেন, তিনি সবসময় গ্রাহকদের স্যার সম্বোধন করে কথা বলেছেন ও সেবা প্রদান করেছেন। আমি দীর্ঘদিন এই ব্যাংকে লেনদেন করি কিন্তু গ্রাহকদের এতো আপন করে নিতে এর আগে কোন ম্যানেজারকে দেখিনি। তিনি একজন বড়ো মনের মানুষ হিসেবে সবসময় আমাদের মতো তরুণ উদ্যোক্তাকে উৎসাহ দিতেন এবং সার্বিক সহযোগিতা করতেন।

সেবা নিতে আসা আরেকজন গ্রাহক মোঃ রুহুল আমিন বলেন, এই ম্যানেজার সাহেবের সময়ে ব্যাংকের কার্যক্রমে শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত ছিলো। তিনি স্বচ্ছতার সাথে কাজ করায় গ্রাহকদের কোন ধরণের হয়রানির শিকার হতে হয়নি।

বিদায়ী ম্যানেজার খাইরুল আলম তুহিন ঢাকা প্রতিদিনকে জানান, এই শাখায় তিনি তিন বছরের বেশি সময় দায়িত্ব পালন করেছেন। দায়িত্ব নেয়ার পর এই শাখা থেকে প্রকৃত কৃষকদের মাঝে শতভাগ কৃষি ঋণ বিতরণ ও আদায় নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি এসএমই খাতেও শতভাগ লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। তিনি আরও জানান, এ সময়ের মধ্যে নতুন কোন ঋণখেলাপী হয়নি।

গ্রাহকদের ‘স্যার’ সম্বোধনের বিষয়ে বিদায়ী ম্যানেজার তুহিন বলেন, গ্রাহকদের স্যার সম্বোধনের বিষয়টি একান্তই ব্যক্তিগত ইচ্ছা। আমি সাধারণত মানুষের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়েই স্যার সম্বোধন করে থাকি। এতে সহজেই মানুষের কাছাকাছি যাওয়া যায়।

চর ঈশ্বরদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা সেলিম বলেন, এই যুগে ম্যানেজার সাহেবের মতো লোক পাওয়া কঠিন। তিনি সদা হাস্যোজ্জ্বল ও সদালোপী। তার মতো মানুষ ব্যাংকের প্রতিটি শাখায় থাকলে ব্যাংকিং খাত দ্রæত আরও উন্নতি করত।