উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার পাশে থাকুন : কুজেন্দ্র লাল এমপি

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাতে ৩য় ধাপে ঘর পেলো আরো ৮শত ৯২টি পরিবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ২৬হাজার ২’শ ২৯টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসময় সারাদেশের ন্যায় খাগড়াছড়ি জেলায় ৯টি উপজেলাসহ ৫২টি উপজেলায় এ জমিসহ গৃহ হস্তান্তর অনুষ্ঠান ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (২১শে জুলাই) সকালে খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে এ জমিসহ গৃহ হস্তান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় রামগড় উপজেলার নির্বাহী অফিসার খোন্দকার মো: ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স’র চেয়ারম্যান(প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা.এমপি।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান ও ২৯৮নং খাগড়াছড়ি আসনের সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেছেন, ‘পাহাড়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ভেদাভেদ ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। পাশে থেকে মানবতার জননী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। বৃহস্পতিবার রামগড়ে আশায়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ৩য় পর্যায়ে ২য় ধাপে ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল ৭৮টি পরিবারের মাঝে ঘরের চাবি ও জমির দলিল হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সারা দেশে একযোগে এসব ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধনের পরই এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা রামগড়ে উপকারভোগীদের হাতে ঘরের চাবি ও জমির দলিল হস্তান্তর করেন।

উপজেলা সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত গৃহ ও ভূমি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া, রামগড় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বিশ্ব প্রদীপ কুমার কারবারি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মো: ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত, পৌরসভা মেয়র রফিকুল আলম কামাল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তফা হোসেন, সাধারণ সম্পাদক কাজী নুরুল আলম আলমগীর, উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান আনোয়ার ফারুক, মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান হাছিনা বেগম, রামগড় সদর ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম মজুমদার, রামগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো: মিজানুর রহমান , উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: নজরুল ইসলাম প্রমুখ।

এছাড়াও উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সুত্র জানায়, এবার খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় ভূমিহীন ও গৃহহীন ৮৯২পরিবারের মাঝে জমিসহ দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সেমি-পাকা গৃহ প্রদান করা হচ্ছে। মঙ্গলবার(১৯ জুলাই) বিকেল ৫টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষ এ উপলক্ষে প্রেস ব্রিফিং করেন জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। ২য় পর্যায়ে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় ৮৫পরিবার, মহালছড়ি উপজেলায় ৩৬পরিবার, দীঘিনালা উপজেলায় ১২০পরিবার, পানছড়ি উপজেলায় ৭২পরিবার, রামগড় উপজেলায় ৭৮পরিবার, গুইমারা উপজেলায় ৬৫টি পরিবার, মাটিরাঙ্গা উপজেলায় ২০০পরিবার, মানিকছড়ি উপজেলায় ৬২পরিবার, লক্ষাছড়ি উপজেলায় ১৭৪পরিবার জমিসহ নতুন গৃহ পাবে। এ ৯টি উপজেলা সর্বমোট ৮৯২পরিবারের মাঝে এ নতুন গৃহ হস্তান্তর করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী,খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার ৯টি উপজলায় ইতিপূর্বে ৩হাজার ৫’শ ৮৯ গৃহহীনদের মাঝে গৃহ নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। চলতি ২০২১-২০২২অর্থ বছরের ৩য় পর্যায়ে ১হাজার ৫’শ ৬পরিবারের জন্য গৃহ নির্মানের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে ১ম পর্যায়ে ৪’শ ৯৮টি ও ২য় পর্যায়ে ৮’শ বিরানব্বই(৯২)পরিবারের জন্য গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। স্থিতি বা অবশিষ্ট ১’শ ১৬টি গৃহ নির্মাণের কাজ অতিদ্রুত সম্পন্ন করা হচ্ছে।

রামগড় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মো: ইখতিয়ার উদ্দীন আরাফাত জানান, বৃহস্পতিবার ৩য় পর্যায়ের ২য় ধাপে রামগড়ে ৭৮টি পরিবারকে ঘর উপহার দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে রামগড় পৌরসভায় ৭টি, রামগড় ইউপিতে ৪১টি এবং পাতাছড়া ইউপিতে ৩০টি পরিবারের মাঝে ঘর ও জমির দলিল হস্তান্তর করা হয়। এর আগে উপজেলায় মোট ৩৪৩টি পরিবারকে গৃহ ও জমির দলিল দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার(২১ জুলাই) সকাল ১০টায় ৩য় পর্যায়ের(২য় ধাপে) সারাদেশে ২৬হাজার ২’শ ২৯ভূমিহীন ও গৃহীন পরিবারের মাঝে এসব পরিবারের মাঝে জমিসহ গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করবেন। এ পর্যায়ে প্রতিটি গৃহ নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছে ২লাখ ৫৯হাজার টাকা।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় তৃতীয় পর্যায়ের ২য় ধাপে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি রাঙামাটি ও বান্দরবানে ভূমিহীন ও গৃহহীন ৯৯৮পরিবার পাচ্ছে জমিসহ দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সেমি-পাকা বসতঘর। মুজিববর্ষে বাংলাদেশের একজন মানুষ ও গৃহহীন থাকবেনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ গৃহ প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে।