এবার নাফ নদের ওপারে মিয়ানমারের সেনা টহল

তুমব্রু শূন্য রেখার পর এবার কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের ওপারে নাফ নদের তীরবর্তী এলাকা জুড়ে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) ইউনিফর্মের আড়ালে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে মিয়ানমার। রোববার সন্ধ্যা থেকে রাখাইন রাজ্যের মংডু এলাকার এক নম্বর সেক্টর থেকে সীমান্ত জুড়েই অতিরিক্তি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা।

এর আগে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে গত বৃহস্পতিবার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ সেনা সমাবেশ ঘটায়। এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দিলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পক্ষ থেকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়। পরদিন (শুক্রবার) বিকেলে ঘুমধুম সীমান্তের মৈত্রী সেতু এলাকায় বিজিবি এবং বিজিপির মধ্যে দেড় ঘণ্টা পতাকা বৈঠক হয়। এরপর সীমান্তে উত্তেজনা কিছুটা কমে আসে। কিন্তু তার একদিন পর রোববার আবারও তুমব্রু সীমান্তে সেনা মোতায়েন করে মিয়ানমার।

টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতা আবদুল মতলব জানান, তুমব্রু সীমান্তে অতিরিক্তি সেনা ও ভারী অস্ত্রের সমাবেশ ঘটানোর পর এবার টেকনাফের নাফ নদের তীরে সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছে মিয়ানমার। অনুপ্রবেশকারীদের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, সেনাবাহিনী বড় বড় গাড়ি নিয়ে রাত-দিন টহল দিচ্ছে।

সেনাবাহিনীর সাবরাং হারিয়াখালী ত্রাণ কেন্দ্রে দায়িত্বরত জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি ও টেকনাফ উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান,সোমবার টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের হারিয়াখালী সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে চার পরিবারের ১৩ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছেন।

তিনি আরও জানান, গত কয়েকদিন ধরে এই পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ থাকলেও আবারও আসতে শুরু করেছে। যেসব রোহিঙ্গা ঢুকে পড়েছে, তাদের মানবিক সহতায় দিয়ে নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে।

সদ্য অনুপ্রবেশকারী দোশ মোহাম্মদ (৪৫) জানান, ‘রোববার সন্ধ্যায় ৪০-৫০ জনের একটি দল বাংলাদেশে পালিয়ে আসার জন্য মংডুর হাসসুরাতা এলাকায় রওনা দেয়। পথে তারা দেখতে পান সেনাবাহিনীর সারি সারি গাড়ি টহল দিচ্ছে। পরে দলটি এলোমেলো হয়ে যায়। তারমধ্যে ১০ জনের মতো একটি দল মিয়ানমার সীমান্তে পৌঁছায়। এরপর তারা নৌকায় নাফ নদ পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েন। বাকিরা কে কোথায় আছে জানা নেই’।

এদিকে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল হাসান জানান, নাফ নদীর ওপারের সীমান্তে মিয়ানমারের সেনা মোতায়েনের খবর সংবাদকর্মীদের কাছ থেকে শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।